টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পকে কেন্দ্র করে ‘সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ’ আয়োজিত চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক তিনটি প্রদর্শনী শুরু
‘সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ’ আয়োজিত চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক তিনটি প্রদর্শনর পর্দা উঠলো
টেক্সটাইল, গার্মেন্টস প্রযুক্তি ও মেশিনারি কেন্দ্রিক “২২তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৩ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো” এর প্রদর্শনীতে আজ থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বর ৪দিন ব্যাপী, বাংলাদেশের সমগ্র বস্ত্র ও গার্মেন্টস শিল্প আবারও পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র (বিবিসিএফইসি)-এ একত্রিত হচ্ছে কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস- সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত টেক্সটাইল সিরিজ অফ এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণে। সুতা, ফ্যাব্রিক, ট্রিমস এবং আনুষাঙ্গিক উৎপাদনকারীদের নিয়ে একই সাথে অনুষ্ঠিত হচ্ছে “২০তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফ্যাব্রিক শো ২০২৩” এবং ডাইস্টাফ, ফাইন ও বিশেষ রাসায়নিক সামগ্রীর সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে- “৪২তম ডাই + ক্যাম বাংলাদেশ ২০২৩ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো”।
১৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার প্রদর্শনীগুলোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, এমপি। উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম।
এছাড়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এ.এইচ.এম. আহসান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; মোঃ নূরুজ্জামান, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), বস্ত্র অধিদপ্তর, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়; মোহাম্মদ আনয়ারুল আলম, অতিরিক্ত সচিব (নীতি, আইন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা), শিল্প মন্ত্রণালয়; মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম, সভাপতি, ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ফারুক হাসান, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং মনসুর আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, এমপি বলেন,
"প্রতি বছর আমাকে এই প্রদর্শনীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এবার এসে দেখি বিরাট ব্যতিক্রম। এতো বড় ব্যতিক্রম আমি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। সত্যি বলতে কি, দেশ যেমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে তেমনভাবে সেমন্স এর নেতৃত্বে এক্সপো সেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে।"।
আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজক সংস্থা সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম বলেন- এই তিনটি প্রদর্শনী বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পের সর্ববৃহৎ এবং সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী, যা এবছর ২২ বারের ন্যায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি ক্রেতা এবং সরবরাহকারীদের জন্য বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় মিটিং প্লেস, যেখানে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ক্রেতা এবং সরবরাহকারীরা ব্যবসার প্রসারে কাজ করতে পারবেন। এই প্রদর্শনীগুলোতে ২,২৪৫ এর অধিক বুথসহ ৩৭টি দেশের প্রায় ১,৬৭৫টিরও বেশি কোম্পানি প্রতিনিধিত্ব করছে।
নানাবিধ শিল্পক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত বি-টু-বি প্রদর্শনীগুলোর ব্যাপ্তি ৪টি মহাদেশে ছড়িয়ে আছে। এই সিরিজ অব এক্সিবিশনের একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হলো টেক্সলাইল শিল্প; যা বাংলাদেশ ছাড়াও ব্রাজিল, মরক্কো এবং শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রদর্শনীগুলো টেক্সটাইল এবং পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক উৎপাদনকারীদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে এবং, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বাজারগুলি ধরতে, সাম্প্রতিক ট্রেন্ডস, পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। টেক্সটাইল সিরিজ অফ এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণে সামগ্রিক টেক্সটাইল ও আরএমজি শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, উপকরণ, সাম্প্রতিক প্রযুক্তি প্রভৃতি প্রদর্শিত হচ্ছে।
এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলোতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল মেশিনারি, ইয়ার্ন, ফ্যাব্রিক, ট্রিমস, অ্যাকসেসরিজ, ডাইস্টাফ এবং টেক্সটাইল কেমিক্যালস সহ সর্বাধুনিক টেক্সটাইল পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সমগ্র টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পের ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য অত্যাধুনিক এবং নিত্য-নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এটি একটি ওয়ান-স্টপ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। এই প্রদর্শনীগুলো টেক্সটাইল শিল্প সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক নির্মাতাদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ প্রদান করছে; যা, প্রতিযোগিতামূলক অ্যাপারেল সোর্সিংয়ের বিশ্ব বাজারে লাভজনক লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আয়োজকদের অভিমত।
সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ এর টেক্সটাইল সিরিজের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো ‘ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি’ প্রদর্শন করা। যেহেতু টেক্সটাইল শিল্পকে ক্রম-পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয় সেহেতু এই প্রদর্শনীগুলি সংশ্লিষ্ট নির্মাতাদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, টেকসই ও পরিবেশ-বান্ধব উপকরণগুলি প্রদর্শনের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ, নিউইয়র্ক ভিত্তিক একটি পেশাদার বহুজাতিক প্রদর্শনী ও কনভেনশন আয়োজক সংস্থা। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত, সেমস-গ্লোবল ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৪টি মহাদেশে সফলতার সাথে ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে পেশাদার বি-টু-বি ট্রেড শো আয়োজন করে আসছে। ৪টি মহাদেশে বিশ্বের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং উন্নয়নশীল দেশে প্রতি বছর সংগঠনটি সফলভাবে ৪০টি ট্রেড শো আয়োজনের মাধ্যমে নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট শিল্প সেক্টরের অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীত্রয় ঢাকাস্থ কাঞ্চন সেতু সংলগ্ন পূর্বাচলের নতুন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র (বিবিসিএফইসি)-এ প্রতিদিন সকাল ১০.৩০টা থেকে সন্ধ্যা ৭.৩০টা পর্যন্ত নিবন্ধনের নিমিত্তে ব্যবসায়িক দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: www.textech-bangladesh.com, www.bd.cems-yarnandfabric.com, www.cems-dyechem.com
No comments