টুয়েন্টি থাউজ্যান্ড লিগস আন্ডার দ্য সি
টুয়েন্টি থাউজ্যান্ড লিগস আন্ডার দ্য সি
বই: টুয়েন্টি থাউজ্যান্ড লিগস আন্ডার দ্য সি
লেখক: জুলভার্ণ
অনুবাদক: মৃণাল কান্তি কর
অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় অথচ 'জুলভার্ণ'-এর নাম শোনেনি এটা নেহাত কাকতালীয় ব্যাপার, বিশ্বাস করা বড়ই দুঃসাধ্য। হ্যাঁ, সেই জুলভার্ণ যে "আশি দিনে বিশ্বভ্রমণ " বইটি লিখেছিলেন। যদিও আশি দিনে বিশ্বভ্রমণ ব্যাপারটা আমার বিশ্বাসযোগ্য ছিল না, তবে" টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি "পড়ার পর সব কিছুই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।
সত্যিই বলতে বিস্মিত হয়েছিলাম আমি নিজেও যখন আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম অধ্যাপক আরোনাক্সের বর্ণনা করা বিশালকায় সামুদ্রিক প্রাণীর সাথে, যে কি না আমেরিকার সমুদ্রবক্ষে ভয়ের সৃষ্টি করেছিল। তখন ,কৌতূহলী হওয়াটা সত্যিই স্বাভাবিক যেমনটা ঘটেছিল অধ্যাপকের ক্ষেত্রে সেখান থেকেই শুরু হয়েছে। অধ্যাপক তার একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য সহযোগী কনসিল আর হারপুন চালনায় পারদর্শী হাঙর শিকারী নেড, যারা হতভাগ্য বরণ করে সমুদ্রবক্ষে নোটিলাসের সফর সঙ্গী হতে বাধ্য হয়েছিলেন। বাধ্য বলছি, কারণ তারা বন্দী হয়ে ছিলেন, স্চ্ছোয় আর যাই হোক ছিয়ানব্বই হাজার গজ পানির নীচে অসহনীয় চাপ আর ভয়ঙ্কর জলচরের সঙ্গে অন্তত ছেলেখেলা করতে যেতে চাইবেন না। বন্দি দশায় সমুদ্রের মুক্তোর মায়া, ইন্ডিয়ান জেলের হাঙরের মুখে সঁপে দেওয়া জীবন বাঁচানো, মাছ শিকার, বিষাক্ত মাকড়সার সাথে লড়াই, দানবীয় অক্টোপাসের সাথে জীবন মরন যুদ্ধ কোনটাই বাদ রাখেন নি। শুধু কি তাই, ফুটন্ত জলের নিচ দিয়ে যাত্রা, হারকিউলিসের সুদৃশ্য মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দর্শন, অ্যাটলান্টিস (প্রথম সভ্যতা) সভ্যতার মনোমুগ্ধকর দর্শন, দক্ষিণ মেরুবলয় অতিক্রম করে, তুষার অতিক্রম করে তুষাররাজ্যের সৌন্দর্য দক্ষিণমেরুর নব্বই ডিগ্রি, ছয় মাসের তমসাচ্ছন্ন ভূমিতে মানুষ হিসেবে প্রথম পা রাখা এমনি বিস্ময় নিয়ে হয়েছিলেন যাত্রা পথের সহযাত্রী ছিলেন। আটলান্টিক, বঙ্গোপসাগর, ফেরাওদের লোহিত সাগর, যার তলদেশ অসীম বিস্ময়, জীব বৈচিত্র আর সম্পদের ভাণ্ডার হাতে ডাকছে ।সেই সাগরের তলদেশে গিয়ে সাগরের এই আহ্বানকে তুচ্ছ হতে দেন নি অধ্যাপক আর তার সঙ্গীরা,কল্পনায় তাদের সফর সঙ্গী হয়ে আন্ডভেঞ্চারের স্বাদ আমিও পেয়েছি, আর হৃদয়ে বুনেছি বাস্তবে দেখার আক্ষেপ।
অধ্যাপক শেষে মুক্তি পেলেন কি না, সাগরের তলদেশে দশ মাস কিভাবে অতিবাহিত করলেন, কি কি দেখেছেন অধ্যাপকের চোখে তার বিস্তর বর্ণনা এতসব প্রশ্নের উত্তর অধ্যাপকই দিতে পারবেন।তবে আমি এতুটুকু নিশ্চয়তা দিতেই পারি যে, বইটি নিয়ে বসলে সময় কিভাবে পার হবে সে আপনি নিজেও বুঝে উঠতে পারবেন না, আর যারা আন্ডভেঞ্চার পছন্দ করেন না তারা নতুন করে বইয়ের প্রেমে পড়তে বাধ্য হতে পারেন।
তবে আরকি বাদলার দিনে, এক কাপ চা বা কফি হাতে বসে যেতে পারেন বইটি নিয়ে, একথায় বইটি পাঠককে নিরাশ করবে না।
আলোচক : মেহেবুবা হাসান
No comments