দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

ইসলামে আছে শান্তির বার্তা | গল্প

ইসলামে আছে শান্তির বার্তা

তখন শীতকাল, কোনো এক শিশিরে ছোঁয়া সকালে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা আজাদ এক বিকট এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তখন বাজে সকাল ৭ টা। 

ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির বাস ধরার জন্য সে যায় রাস্তায়, ক্লাস, ক্লাসের ফাঁকেফাঁকে আড্ডা, মাস্তি! কখন যে সময় ফুরিয়ে যায় টেরই পায়না সে! যাক, তারই ক্লাসে পড়া আরেকজন, যার নাম হলো আয়ান। যে কিনা খুবই ধার্মিক। 

সে সবসময় আজাদকে বলে ভাই, তুই যে এসব করিস, এগুলা কিন্তু ভালো না! আজাদ বলে কেনো কি হয়েছে আমি আবার কি করলাম? 

তখন আয়ান বলে ভাই, তুই যে সকালে ঘুম থেকে উঠিস তুই চাইলে তো ভোরে উঠে ফজরের নামাজটা পড়তে পারিস আবার এই যে সারাদিন আড্ডা মাস্তিতে মেতে থাকিস ১০-১৫ মিনিট লাগবে যোহরের নামাজ আদায় করতে কিন্তু তুই পারিস না!আজাদ বলে ভাই থাম থাম! তোর এই ঘ্যানঘ্যানানি আর ভাল্লাগেনা। সেই ফার্স্টইয়ার থেকেই এসব শুনে আসছি বাদ্দেনা আর শোন প্লিজ এগুলা বলবি না অন্যকিছু থাকলে বল! 

আয়ান বলে ভাই এই পৃথিবীটা একটা পরীক্ষা ক্ষেত্র। আমরা হচ্ছি পরিক্ষার্থী এই দুনিয়াটা হচ্ছে খাতা আর আমরা কি লিখছি সেটর ফলাফল কিন্তু আমরা পাবো। এই জগৎটা মাত্র দুইদিনের আমরাতো মেহমান মাত্র। এখানে ভালো করলে পরে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হবি তুই! কিন্তু এগুলা কানেই নেয়নি সে। সিগারেটের প্রতিও তার আসক্তিটা ছিলো। শুধু আয়ান না, নাজমুল, সাকিব জুই এরকম আরোও অনেকে তাকে বোঝায় কিন্তু কারোই কথা সে মানে না। 

একদিকে সে ছিলো খুব ভালো, সেকেন্ড ইয়ারে সে সিজিপিএ ৩.৮০ পেয়ে থার্ড ইয়ারে উঠে। একদিন একটা ট্রিপে ফ্রেন্ডের সাথে সে যায় এবং ভাগ্যক্রমে একটা ওয়াজ মাহফিলের কাছাকাছি তারা থাকে। হঠাৎ আজাদ শুনে এক মধুর কন্ঠে ভেসে আসা কোরআনের সুর, আহা কি মধুর! খুব ভালো লাগে তার, মনের সকল তৃপ্তি মেখে শুনে সেই পড়া! আর হুজুরের ওয়াজ শুনে তার খুব ভালো লাগে। 

ঢাকায় যখন ফিরে আসে, তখন শুধু একটা কথাই ভাবে, এই জগৎ সংসারতো কেবলমাত্র এক মেহমানদারি। আমি যা করেছি তা আসলে ঠিক করিনি। এই কথাগুলো ভেবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সে ক্ষমা চায়, আর বলে-
"হে আল্লাহ তুমিতো পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু, আমি যা করেছি সব মাফ করে দাও"। আর কোরআন পড়ে দাড়িও রাখে কারণ তখন তাদের সামার ভোকেশন চলছিলো। ক্যাম্পাস খোলার পরে যখন সে ভার্সিটি যায় সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। একটা মানুষের ইসলামের প্রতি প্রেম আর নবীর আদর্শে উজ্জীবীত হওয়া এক যুবক! এভাবে কেটে যায় তার ভার্সিটি লাইফ এবং সে সিজিপিএ ৩.৯৭ পেয়ে পাশ করে। যখন সে প্রথম চাকুরির ইন্টারভিউ দিতে যায় এবং সে এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয় যে আপনি সেভ করে এলেন না কেনো? তখন সে বলে আমি নবীকারীম (সাঃ) এর আদর্শে জীবন গড়ার শপথ নিয়েছি তাই ঠিক তখনই যোহরের আজান হচ্ছিলো আর মজার বিষয় হলো সে বলে "Sir, please give me five minutes for prayer!" তখন ভাইভা বোর্ডে থাকা সবাই বলেন যে, আপনি এখন যেতে পারবেন না, পরে যান! এবং ঠিক সেই মুহুর্তে সে ইন্টারভিউ ছেড়ে চলে যায়! শুধুমাত্র নামাজ পড়ার জন্য। সেই আজাদ আজ শুধু ইসলামকে ভালোবেসে এই পরিবর্তনে পরিবর্তিত করেছে নিজেকে!  

অতঃপর সে বিভিন্ন চাকুরির সুযোগ পায় আস্তে আস্তে প্রোমোশন পেয়ে সরকারের বিভিন্ন মর্যাদাসম্পন্ন স্থান অলংকৃত করে। আজ সে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যে কিনা অনেক উঁচু একটা পদ অলংকৃত করে আছে। কিন্তু সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী,ভইসলামের সকল বিধিনিষেধ মেনে চলে সে! যদিও সে আজ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কিন্তু আজও সে ইসলামের দাওয়াত দেয়, মানুষকে সঠিক পথ দেখায়, যে পথে আছে শুধু শান্তি আর সমৃদ্ধি। 

সে আজ একজন অনেক বড় ইসলামিক স্কলার। সকল ধর্মের মানুষের প্রতিও আছে আর সহমর্মিতা আর মানবিক বোধ। আল্লাহর প্রেমে  মানুষ নিজেকে পরিবর্তন করে এক শান্তির পন্থায়। সে আগে একজন পথভ্রষ্ট মানুষ ছিলো, আজ সে ইসলামের শান্তির পথের এক পথিক। আজ তাকে দেখে হাজারো যুবক ইসলামকে ভালোবেসে ইসলামের শান্তির পথ বেছে নেয়।
যদি সে এতো পরিবর্তন আনতে পারে তার মাঝে, তবে আমরা কেনো নয়?

বিঃদ্র- সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক।
লেখক-  রেজাউল ইসলাম তামিম


No comments

Powered by Blogger.