লাল নীল দীপাবলি | হুমায়ুন আজাদ | বুক রিভিউ
লাল নীল দীপাবলি | হুমায়ুন আজাদ |
বইয়ের নাম: লাল নীল দীপাবলি
লেখক: হুমায়ুন আজাদ।
সাধারণত বিসিএস পরীক্ষার্থীদের কাছে লাল নীল দীপাবলি বইটি দেখতে পাওয়া যায়। যেমনটি আমার
বড়বোনের কাছে ছিলো। কিন্তু বিসিএসের প্রস্তুতির জন্যে নয়, লাল নীল দীপাবলি বইটির নাম
জানতে পারি আমার অন্যতম প্রিয় একজন বাংলার শিক্ষকের কাছে, যিনি আমার মধ্যে
বাংলার প্রতি ভালোবাসাটা তৈরি করে দিয়েছেন। লাল নীল দীপাবলি বইটাকে 'বাংলা সাহিত্যের
জীবনী'ও বলা হয়। আমার বিভাগের এক প্রিয় জুনিয়র লাল নীল দীপাবলি বইটি আমাকে আমার এক
জন্মদিনে উপহার দেয়৷ আর সাহিত্যের প্রতি তুমুল আগ্রহের কারণেই লাল নীল দীপাবলি বইটা পড়তে
শুরু করি....
শুরুতেই একটা আফসোসের কথা বলি, লাল নীল দীপাবলি বইটিতে মুসলমান লেখকদের
যথেষ্ট অবজ্ঞা করা হয়েছে। আমি মানলাম, মুসলমান লেখকরা যখন ছিলেন তখন খুব
একটা উঁচুদরের সাহিত্য হয়নি বলে সে যুগকে অন্ধকার যুগ বলা হয়েছিলো। কিন্তু
এত তথ্যবহুল একটা বই লাল নীল দীপাবলি- যেখানে নাম না জানা হাজারো লেখকের কথা আছে, সে জায়গায়
কবি কাজী নজরুল সম্পর্কে একটা পৃষ্ঠার ৩ ভাগের এক ভাগে অল্প কিছু কথা!
যেখানে রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে ৫/৬ পৃষ্ঠা লেখা! আমি কারোর সাথে কাউকে তুলনা
করছি না, তবে কাজী নজরুলকে নিয়ে লেখকের আরো অনেক কিছুই লেখার ছিলো কিন্তু
লিখেননি লাল নীল দীপাবলি বইটিতে।
এর বাইরে যদি বলি, লাল নীল দীপাবলি বইটি যেমন তথ্যবহুল তেমনই ভীষণ
সুন্দর ভাবে তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। লাল নীল দীপাবলি বইটিতে বাংলা সাহিত্যের ৩ যুগের
বর্ণনা রয়েছে। এছাড়া বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন আবিষ্কার এর কথা, গদ্য,
কবিতা, উপন্যাস, নাটক, লোকসাহিত্য, প্রত্যেকটা ক্ষেত্র কে সূচনা করেছে, কার
হাতে বিস্তার লাভ করেছে, যথার্থতা পেয়েছে সকল কিছুর এত সুন্দর ভাবে আলোচনা
রয়েছে!!!
এমনকি আপনার পড়তে পড়তে মনে হতে পারে, আপনি প্রাচীন যুগে আছেন,
সাহিত্য গুলো তৈরি হচ্ছে, মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিক যুগে এলেন। যদি
সাহিত্যপ্রেমী হয়ে থাকেন, একের পর এক সাহিত্য তৈরীর কাহিনী আপনাকে মুগ্ধ
করবেই!
যেহেতু, লেখাটা শুরু হয়েছিলো বিসিএস দিয়ে কাজেই শেষ করছি বিসিএস প্রশ্নব্যাংক থেকে নেয়া কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দিয়ে যেগুলো এই লাল নীল দীপাবলি বই
থেকে এসেছে-
** সবুজপত্র প্রকাশিত হয় >> ১৯১৪ সালে।
** বিষাদ সিন্ধু একটি>> ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস।
** মাইকেল মধুসূদন এর পত্রকাব্য>> বীরাঙ্গনা।
** ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আত্মজীবনী >> আত্মচরিত।
** সবচেয়ে বেশি চর্যাপদ পাওয়া গিয়েছে>> কাহ্নপার (১৩টি)
** দ্রোপদী>> মহাভারতের পাঁচ ভাইয়ের একক স্ত্রী।
** বাংলা সাহিত্যে প্রথম স্বার্থক ট্রাজেডি নাটক>> কৃষ্ণকুমারী।
** দিবারাত্রির কাব্যের লেখক>> মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরো অনেক প্রশ্ন দেখলাম বিভিন্ন বছরের এই বই থেকে এসেছে।।।।
লাল নীল দীপাবলি বইটির শেষ লাইন,
চিরকাল এভাবেই জ্বলবে বাঙলা সাহিত্যের লাল নীল দীপাবলি।
লাল নীল দীপাবলি বইটির মাধ্যমে কিন্তু সাহিত্যের বিভিন্ন যুগ থেকে চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন....
লিখেছেন-
সুমাইয়া আহমেদ,
শিক্ষার্থী বিবিএ (মার্কেটিং ৪র্থ বর্ষ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments