দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

শেষ বিকেলের মেয়ে | জহির রায়হান | বুক রিভিউ

শেষ বিকেলের মেয়ে - জহির রায়হান
বইয়ের নাম: শেষ বিকেলের মেয়ে।
লেখক: জহির রায়হান।

'হাজার বছর ধরে' এই উপন্যাসটির মাধ্যমে জহির রায়হানের উপন্যাস পড়া শুরু করেছিলাম। 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসটির মুগ্ধতাকে সাথে নিয়ে পড়তে শুরু করি 'শেষ বিকেলের মেয়ে'। নামটার মধ্যেই যেন এক প্রকার মায়া জড়ানো আছে।

মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে কাসেদ যে কেরানীর চাকরি করে। মা, দুর সম্পর্কের খালাতো বোন নাহার আর কাসাদ এই তিনজনের পরিবার। জাহানারাকে অসম্ভব ভালোবাসে কাসেদ। কিন্তু সেটা মুখ ফোটে কোনোদিনই বলতে পারে না সে। কল্পনায় হাজারো জাল বুনে যায়, শহরতলীতে বাসা থাকবে তাদের, বিকেলে দুজন এক পথে হেটে এসে বারান্দায় বসে একসাথে চা খাবে। কোনো এক বর্ষণমুখর দিনে জাহানারার কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়ে কাসেদ জাহানারার বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় মুখর এক মেয়ে শিউলির সাথে। শিউলির আচরণে মনে হয় শিউলি কাসেদকে পছন্দ করে। 

কিন্তু কোনো একদিন জাহানারা কাসেদের বাড়িতে এসে জানায় শিউলির পছন্দের মানুষ আছে যে কিনা দেশের বাইরে থাকে। আবার শিউলির কাছে কাসেদ জানতে পারে জাহানারার সম্পর্ক রয়েছে তার সেতারা মাস্টারের সাথে। কাসেদের মনে তখন ভাবনা সকল মেয়েই এক, ভিন্ন দেহ এক মন। কিন্তু ব্যাতিক্রম তার আরেক খালার মেয়ে সালমা যে তাকে শুধু ভালোবেসেই গিয়েছে। আর কাসেদ শুধু তাকে আঘাত দিয়ে গিয়েছে। সালমা চেয়েছিলো বিয়ের পরও কাসেদের হাত ধরে হারিয়ে যেতে। কাসেদ সেটা করতে পারেনি। কাসেদের অফিসের হেডক্লার্ক মকবুল সাহেবের বাসায় গিয়ে শেষ আলোয় দেখা যে কালো মেয়েটি তাকেও সে আপন করতে পারেনি। তার চেহারার দিকে তাকানোর সাহস দেখানোর আগেই সে বিয়ে করে ফেলে কাসেদের অফিসের বসকে। শেষে কাসেদের মা মারা যাওয়ার আগে নাহারকে তার খালুর কাছে দিয়ে যায় বিয়ের আয়োজনও করা হয়ে যায়।

সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব কাসেদ শেষ বিকেলে যখন একাকী এ শহর এবং আকাশটা দেখছে, তখন হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ। কে ফিরে এলো তার কাছে?
জাহানারা? শিউলি? সালমা? নাহার? নাকি অন্য কেউ?? কে শেষ বিকেলের মেয়ে হয়ে তার কাছে সব ছেড়ে চলে এলো? সেটা নাহয় উপন্যাস পড়েই জেনে নিবেন.... 😃😃😃 চমক আছে বেশ!!

উপন্যাসটি হতে প্রিয় কিছু লাইন,
'নিজের মঙ্গলের জন্যে অন্যের ক্ষতির চিন্তা করতে মানুষ একটুও বিলম্ব করে না'
'সুখ জিনিসটা মনের ব্যাপার, ওটা যদি বাইরের হতো তাহলে সাদা চোখে দেখা যেতো'
'দুই মন দুই মেরুতে, মিল যেখানে নেই, সেখানে সুখের তালাশ করা পাগলামো'
'জীবন হতে পালিয়ে যাওয়া কাপুরুষের লক্ষণ'
'চাওয়া-পাওয়ার মাঝে সাপে-নেউলে সম্পর্ক আছে, তাই আমরা যা চাই তা পাই না'


লিখেছেন-
সুমাইয়া আহমেদ,
শিক্ষার্থী বিবিএ (মার্কেটিং ৪র্থ বর্ষ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.