কাদম্বরী দেবীর সুইসাইড-নোট | রঞ্জন বন্দোপাধ্যায় | বুক রিভিউ
রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠানের শেষ চিঠি।
লেখক: রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়
প্রকাশিত: ২০১৩ সাল।
কলকাতার জোড়াসাকোর ঠাকুরবাড়ির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনযাপন, সে সময়কার বিভিন্ন ঘটনা, পারিপার্শ্বিকতা র প্রেক্ষিতে লেখক এই বইটি রচনা করেছেন, যেখানে কাদম্বরীর জবানীতে উঠে এসেছে অভিমান, কষ্টের কিছু কথা, যার নাম দিয়েছেন সুইসাইড নোট।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজ দা জ্যোতিরিন্দ্রনা থ ঠাকুর এর স্ত্রী কাদম্বরী দেবী, যিনি আফিম খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু সে সময়ের কোনো খবরের কাগজে সেই আত্মহত্যার খবর বেরোতে দেয়নি ঠাকুর পরিবার।
কাদম্বরী দেবী যখন বউ হয়ে প্রথম ঠাকুরবাড়িতে আসেন, সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথ তার প্রায় সমবয়সী একজন। ঠাকুর বাড়িতে এত মানুষের ভীড়ের মধ্যে প্রাণ খুলে দুটো কথা বলার মত একজন
মানুষ পায় নববধু কাদম্বরী দেবী, রবীন্দ্রনাথ যাকে নতুন বোঠান বলে ডাকতো।
এদিকে কাদম্বরীর স্বামী, রবীন্দ্রনাথের মেজদার বেশি সময় কাটতো বড় বৌদি,
জ্ঞানদানন্দিনীর সাথে। কাদম্বরী দেবী ছিলন ঠাকুরবাড়ির বাজার সরকারের তিন নম্বর মেয়ে, এ কারণে অনেক লাঞ্ছিত, অবহেলিত হতে হয়েছে তাকে।
জীবনের অনেকটা সময় কাটে তার প্রাণের রবির সাথে। রবীন্দ্রনাথের যেকোনো লেখার প্রথম শ্রোতা ছিলো তার নতুন বৌঠান। ভালোই
কাটছিলো সেই সময়গুলো, কিন্তু আধার ঘনিয়ে এলো, যখন রবীন্দ্রনাথ বিয়ের পিড়িতে
বসেন। রবীন্দ্রনাথের সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ এবং তার প্রিয়
নতুন বৌঠানের প্রতি অবহেলা, কাদম্বরীর মনে অনেক আঘাত হানে, এছাড়াও তার
স্বামীর অন্য অভিনেত্রীর সাথে সম্পর্ক, সব কিছু মিলিয়েই তিনি বেশ ভেঙ্গে
পড়েছিলেন।
কিন্তু কাদম্বরীর মৃত্যুর জন্যে লেখক আসলে এই সুইসাইড নোট
বইয়ে কাকে বা কোন বিষয়কে দায়ী করেছেন? সেটা জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে
বইটি। বইটার সামগ্রিক কাহিনী বিশ্লেষণ খারাপ নাহ। সাবলীল ভাবেই
উপস্থাপিত হয়েছে বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া সেই সময়কার অনেক কাহিনী। যদিও
বইটিতে কিছু বিষয়ে বেশ অতিরঞ্জিতই মনে হয়েছে।
লিখেছেন-
সুমাইয়া আহমেদ,
শিক্ষার্থী বিবিএ (মার্কেটিং ৪র্থ বর্ষ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments