যৌন হয়রানি একটি সামাজিক ব্যাধি
যৌন হয়রানি একটি সামাজিক
ব্যাধি
চারদিকে শুধু ভয় হয়,কখন জানি কি হয়-এই আতঙ্ক নিয়ে চলছে আমাদের নারী সমাজের নিত্যনৈমিত্তিক সকল কাজ।
নারী মানেই কি শুধু ভোগের বস্তু, যে কিনা পুরুষের গ্রাসে সবসময় অসহায় এক নিরীহ জীব।হ্যাঁ বলছি, আজকালের দৈনন্দিন
শব্দ যৌন হয়বানির কথা।পুরুষ সমাজের কথা
নাই বলি।বাংলাদেশের ৬০ শতাংশের বেশী পুরুষ নারীকে যৌন হয়রানির মধ্যে এক ধরনের মজা
খুঁজে পান এবং এদের ৫০শতাংশেরও বেশী এ ধরনের যৌন হয়রানীর মধ্যে কোন অপরাধ খুঁজে
পান না। সবচেয়ে বেশী যৌন হয়রানির শিকার হয় ১১থেকে
১৫বছরের কন্যা শিশুরা।আসলে নারী সমাজ কি জানে ঠিক কি কি আচরণ গুলোকে যৌন
হয়রানি বলে বিবেচিত হয়। নাকি দিনের পর দিন সেই আচরণ গুলোকে স্বাভাবিক মেনে নেওয়ার
অভ্যাসে পরিণত করেছে। যৌন হয়রানি এখন নিত্যাদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।বর্তমানে এটি
একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়,এটি বৈশ্বিক
সমস্যায় রুপ নিয়েছে।সমস্যাটিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। বর্তমানে সারাবিশ্বে
প্রতি দশজন নারীর মধে নয়জন নারী জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে যৌন হয়রানির শিকার ঘরে,
পথে,ঘাটে, শিক্ষা এবং কমর্ক্ষেত্রে সর্বএই যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন নারীরা ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অসচেতনতা এবং আদালতের নির্দেশনা না
জানা অথবা জানলেও তা না মানার কারণে কমছে না যৌন হয়রানির ঘটনা।
হাইর্কোটের নিদের্শনা মোতাবেক যৌন হয়রানি বলতে বোঝায়-
১.অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন আবেদন মূলক আচরণ সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতে শারীরিক স্পর্শ
বা প্রচেষ্টা।
২.যৌন হয়রানি বা নিপীড়ন মুলক উক্তি
৩.যৌন সুযোগ লাভের জন্য অবৈধ আবেদন
৪.পর্নোগ্রাফি দেখানো
৫.যৌন আবেদন মূলক মন্তব্য বা ভঙ্গি
৬.প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে কারও সঙ্গে যৌন সম্পর্ক
স্থাপনের চেষ্টা করা ৭.অশালীন ভঙ্গি, যৌন
নিযার্তন মূলক ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উও্যক্ত করা, কাউকে অনুসরণ করা বা পেছন
পেছন যাওয়া, যৌন ইঙ্গিতমুলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাসকরা ৮.চিঠি,টেলিফোন,
মোবাইল,এসএমএস, ছবি,নোটিশ, কার্টুন,বেঞ্চ,চেয়ার - টেবিল, নোটিশ বোর্ড,অফিস,
কারখানা ,শ্রেণী কক্ষ, শৌচাগারের দেয়ালে
যৌন ইঙ্গিতমুলক অপমানজনক কোন কিছু লেখা
৯.ব্ল্যাকমেইল অথবা চরিএ লঙ্ঘনের উদ্দেশে স্থিরচিএ ধারণ করা
১০.প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখ্যাত
হয়ে হুমকি দেওয়া
১১.ভয় দেখিয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপন
১২.যৌন হয়রানির কারণে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক,প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত
কাযর্ক্রম থেকে বিরত থাকা।
নারীকে আজ নিরব দশর্ক হয়ে থাকলে চলবে না।নিজের নিরাপত্তা ও অধিকার আদায়ে
সোচ্চার হতে হবে।তাই বিশ্বের অন্যান্য
দেশের মতো আমাদের দেশেও সচেতনতার পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রেযৌন হয়রানির প্রতিরোধে একটি
পৃথক ও পুনার্ঙ্গ আইন থাকা দরকার।আইন প্রনয়ন ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত হলে
নারী ও কন্যা শিশুদের সকল ক্ষেত্রে চলাচলের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
কন্যাশিশু ও নারীদের অভিগম্যতা বৃদ্ধিপাবে,নারীর নিরাপদ শিক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত হবে,
কন্যাশিশু ও নারীর আয় বাড়বে। পাশাপাশি তাদের ব্যাক্তিগত, নাগরিক ও মানবিক অধিকার
সুরক্ষিত হবে।
লিখেছন-
সোনিয়া আক্তার পুষ্প
ইমেইল-
soniaakterpuspo1996@gmail.com
শিক্ষার্থী-
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
No comments