'জননী সাহসিকা' / মাদার কারেজ এন্ড হার চিল্ড্রেন নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ
ছবি- কামালউদ্দিন খান |
জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ট ব্রেখট (১৮৯৮-১৯৫৬) রচিত Mutter Courage und ihre Kinder (Mother Courage and Her Children) যার বঙ্গানুবাদ 'জননী সাহসিকা' ইউরোপের ত্রিশ বছরের ধর্ম যুদ্ধের পটভূমিতে রচিত অন্যতম যুদ্ধবিরোধী এপিকধর্মী ক্রনিকল প্লে। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র অ্যানা ফিয়ার্লিং একটি চলমান ক্যান্টিনের মালিক। যুদ্ধের ধ্বংসলীলার মধ্যে অসীম সাহসের সঙ্গে নিজের মালামাল সে যেভাবে বাঁচিয়েছে তারই স্বীকৃতিস্বরূপ লোকজন তার উপাধি দিয়েছে 'জননী সাহসিকা'।
তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে বেপরোয়া ও দুঃসাহসী, নাম এলিফ। ছোট ছেলে অত্যন্ত সৎ, তাকে ডাকা হয় সুইস পনীর বলে। তরুণী কাট্রিন অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ, কিন্তু বোবা।
পরিবারের পঞ্চম সদস্য হলো জীবিকা নির্বাহের মূল অবলম্বন তার খাবার গাড়িটি।
সন্তানরা খাবারের গাড়ি টানে, মা ও তিন সন্তান গাড়ি নিয়ে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যায়, এক দেশ থেকে অন্য দেশে। যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে মা সৈন্যদের কাছে খাবার ও অন্যান্য তৈজসপত্র বিক্রি করে পরিবারের সবার জীবিকার সংস্থান করে, সযত্নে চাতুর্যের সঙ্গে তিন সন্তানকে বাজ পাখির ন্যায় যুদ্ধের আঁচ থেকে দূরে রাখতে চায়। কিন্তু এক পর্যায়ে বেপরোয়া এলিফ সুইডিশ প্রটেস্ট্যান্ট সেনাবাহিনীতে যোগ দেয় এবং অল্পদিনের মধ্যেই তার দুঃসাহসিক কীর্তিকলাপের জন্য যশস্বী হয়ে ওঠে। সুইস পনীরও ক্যাশিয়ার হিসেবে যোগ দেয় সেনাবাহিনীতে কিন্তু তার সততা ও দায়িত্ববোধই তার মৃত্যুদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়। আক্রমণকারী শত্রু সৈন্যদের হাত থেকে নিজেদের সেনাবাহিনীর ক্যাশবাক্স বাঁচাতে গিয়ে সে ধরা পড়ে।
ছবি- কামালউদ্দিন খান |
যুদ্ধকে 'জননী সাহসিকা' শাপ-শাপান্ত করলেও যুদ্ধের সুবাদেই তার জীবিকা নির্বাহ হয়। এমনকি এক পর্যায়ে স্বল্পকালীন যুদ্ধহীন শান্তির পরিবেশে তার ব্যবসা লাটে উঠবে এই আশঙ্কায় সে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় না বরং অর্থহীন অপচয়ভরা দীর্ঘ সংঘর্ষ চলতেই থাকে।
যুদ্ধের সর্বনাশী থাবায় জননী সাহসিকা একে একে তার তিন সন্তানকেই হারায়। যুদ্ধ তার জীবনের সবকিছু হরণ করে কেবল অবশিষ্ট থাকে তার খাবার গাড়ি। জীবিকার তাগিদে একাই টেনে বেড়ায় খাবার গাড়িটি, অতঃপর সেই সর্বভূক যুদ্ধ আর সাহসিকার জীবন সমান্তরালে এগিয়ে চলে।
'জননী সাহসিকা' / মাদার কারেজ এন্ড হার চিল্ড্রেন নাটকের ব্রুশিয়ার |
সংকলনে- মো. এনামুল হাসান কাওছার, শিক্ষার্থী, জবি।
No comments