থ্রি সিস্টার্স নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ | লিখেছেন- মো. এনামুল হাসান কাওছার
থ্রি সিস্টার্স নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ | লিখেছেন- মো. এনামুল হাসান কাওছার
থ্রি সিস্টার্স নাটকের চরিত্রাবলি
১) আন্দ্রেউ প্রোজোরফ
বই পড়ুয়া, তাস খেলে, তাস খেলে হেরে যায় এবং দেনাগ্রস্থ হয়, বউয়ের কথার প্রাধান্য দেয়, ৪ ভাইবোনের বাড়ি কাউকে না জানিয়ে মরগেজ দেয়, সে প্রফেসর হতে চেয়েছিল কিন্তু হতে পারেনি। প্রথমে নাতাশার প্রেমে পড়ে এবং
পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করে।
২) নাতাশা
আন্দ্রেই এর প্রেমিকা (১ম অংক- থ্রি সিস্টার্স), পরবর্তীতে আন্দ্রেই এর স্ত্রী, দুই সন্তান এর জননী। প্রথম সন্তানের নাম- ববিকিনস।
৩) ওলগা
থ্রি সিস্টার্স নাটকের ৩ বোনের মধ্যে ২৮ বছর বয়সী
ওলগা সবার বড় বোন। অবিবাহিত।
৪) মাশা
ফিওদোর কুলিগিনের স্ত্রী। কিন্তু সে আলেকজান্ডার
ভারশিনিনকে ভালোবেসে ফেলে।
৫) ইরিনা
২০/২৩ বছর বয়সী, ব্যারন টুসেনবার্খকে বিয়ে করতে সম্মত হয় কিন্তু ব্যারন দ্বন্ধ যুদ্ধে মারা যায়
থ্রি সিস্টার্স নাটকের শেষ অংকে- ৪র্থ।
৬) ফিওদোর কুলিগিন
শিক্ষক, প্রোজোরফ পরিবারের দ্বিতীয় মেয়ে মাশা-এর স্বামী।
৭) আলেকজান্ডার ভারশিনিন
৪৩ বছর বয়স্ক, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ব্যাটারি কমান্ডার, সে পূর্বে মস্কোতে বসবাস করতো, তার স্ত্রী ও সন্তান আছে, স্ত্রী স্বামীর
গুরুত্ব পাওয়ার জন্য বারংবার বিষ খাওয়ার হুমকি দেয়, সে মাশাকে ভালোবেসে ফেলে।
৮) ব্যারন টুসেনবার্খ
২৯ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট, প্রোজোরফ পরিবারের ছোট মেয়ে ইরিনাকে ভালোবাসে, থ্রি সিস্টার্স নাটকের শেষ অংকে সে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে মারা
যায়।
৯) ভাসিলি সলিয়নি
স্টাফ ক্যাপ্টেন, সেও ইরিনাকে ভালোবাসে কিন্তু ইরিনা তাকে প্রত্যাখ্যান করে, সে ইরিনাকে বলে যে তার ভালোবাসার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ হলে
তাকে সে হত্যা করবে।
১০) ইভান চেবুতিকিনি
৬০ বছর বয়স্ক সেনাবাহিনীর ডাক্তার, দুইবছর পর সে মদ খেয়ে মাতাল হয় এবং বলে সে এখন চিকিৎসা
বিজ্ঞানের সব ভুলে গেছে আর তার ভুল চিকিৎসার কারণে সদ্য একজন মহিলা মারা গেছেন।
১১) ফেদোতিক
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট।
১২) ফেরাপন্ত
ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের পিওন, বুড়ো।
১৩) রোদে
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট
১৪) আনসিফা
৮০/৮১ বছরের বৃদ্ধা, ন্যানী, নাতাশা তাকে
অপমানিত করে কারণ তার বয়স হয়ে যাওয়াতে সে এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারে না, সে মাঝেমধ্যেই ঘুমিয়ে তাকে, সে কান্না করে ওলগাকে বলে যাতে তারা তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে না দেয়।
থ্রি সিস্টার্স নাটকে সরাসরি পাওয়া যায়না কিন্তু উল্লেখ আছে এমন কতিপয় চরিত্র-
১৫) ববিকিনস
আন্দ্রেই ও নাতাশার ছেলে সন্তান।
১৬) নাতাশার প্রেমিক
তার সাথে ঘুরতে বের হয় নাতাশা।
থ্রি সিস্টার্স নাটকের সারাংশ/ থ্রি সিস্টার্স নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা প্রোজোরফ এর মৃত্যুর প্রায়
একবছর অতিবাহিত হয়। তার চার সন্তান রাশিয়ার একটি ছোট শহরে তাদের বাড়িতে বসবাস
করতেন।
বড় মেয়ে ওলগা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। বিবাহিত
মাশা মেজো সন্তান, সে একটু অন্যরকম
মেজাজের। সে তার স্বামী যিনি একজন শিক্ষক ও অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত
কুলিগিনকে এড়িয়ে চলে। পরিবারের মধ্যে ইরিনা সবচেয়ে ছোট্ট। তার জন্মদিনের
অনুষ্ঠানের আবহতে নাটকটি শুরু হয়। সে অনেক আশাবাদী কিন্তু জীবনের গতিময়তা নিয়ে সে
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।
বিভিন্নরকম চরিত্রাবলি দেখা যায় প্রোজোরফ
পরিবারের মধ্যে। তারমধ্যে ৬০ বছরের বয়সী সেনাবাহিনীর ডাক্তার চিবুতিকিনি একজন। সে
এমনিতে প্রফুল্ল কিন্তু মাঝেমধ্যে মদপান করে নেশায় মাতাল হয়ে যায়। তিন বোনের আদরের
একমাত্র ভাই আন্দ্রেই অনেক মেধাবী, সে বর্তমানে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলে কাজ করে। সে স্থানীয় মেয়ে নাতাশার প্রেমে
পড়ে। ব্যারন টুসেনবার্খ ইরিনাকে ভালোবাসে। অন্যদিকে ভাসিলি সলিয়নিও ইরিনাকে
ভালোবাসে,
যদিও তার প্রস্তাবকে ইরিনা প্রত্যাখ্যাত করে।
ইরিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ব্যাটারি কমান্ডার ৪৩
বছর বয়সী বিবাহিত আলেকজান্ডার ভারসশিনিন বিনা নিমন্ত্রনে যোগদান করে। সে পূর্বে
মস্কোতে বসবাস করতো এবং প্রোজোরফ পরিবারের সবার সাথে তার দেখা হয়েছিলো। তখন তারা
সবাই অনেক ছোট ছিলো। তার স্ত্রী স্বীয় স্বামীর আগ্রহ অর্জনের জন্য প্রায়শই
আত্মহত্যার উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে ভারশিনিন ও মাশা দুইজন দুইজনের প্রেমে পড়ে।
থ্রি সিস্টার্স নাটকের ২য় অংকে- আন্দ্রেই নাতাশাকে বিয়ে করে। নাতাশা নিজের মতো করে পরিবারে
কতৃর্ত্ব স্থাপনের চেষ্টা করে। তাদের সন্তান ববিকিনস এর থাকার জন্য ইরিনার কক্ষ
আবদার করে বসে এবং প্রায় ৩০ বছর থেকে এই বাড়িতে অবস্থানরত কাজের লোক ন্যানী
আনসিফার সাথে খারাপ ব্যাবহার করে।
একই রাতে অন্যান্য সকল মিলে পার্টি করার জন্য
মূকাভিনেতাদের আমন্ত্রণ জানায় কিন্তু নাতাশা তার সন্তানের বিরক্তিকর অবস্থায় পড়বে
এই আশঙ্কায় মূকাভিনেতাদের আসতে নিষেধ করে দেয়। এতে সবাই মনঃক্ষুণ্ন হয়ে চলে যায়।
সবাই চলে যাওয়ার পর ভাসিলি সলিয়নি এসে ইরিনার
কাছে প্রেম নিবেদন করে। ইরিনা তার আচরণে বিরক্তবোধ করে এবং তাকে প্রত্যাখ্যান করে।
তখন নাতাশা স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রটোপ্রোভ এর সাথে ঘুরতে বের হয়, যার সাথে নাতাশার পূর্ব সম্পর্ক ছিলো।
থ্রি সিস্টার্স নাটকের ৩য় অংকের শুরুতে- এক ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখায় শহরের অধিকাংশ পুড়ে
ছাঁই হয়ে যায়। ওলগার সাথে ইরিনা শয়নকক্ষ বিনিময় করে এবং অগুন নিয়ে তাদের মধ্যে
কথোপকথন হয়।
দুইবছর পর চিবুতিকিনি মাতাল হয়। সে মদ্যপ অবস্থায়
বলে যে,
সে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবকিছু ভুলে গেছে এবং তার ভুল
চিকিৎসায় সদ্য একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। সে ওলগার মায়ের চমৎকার ঘড়িটি ভেঙে ফেলে
এবং এমন ভাব করে যে এটা ভেঙে যাওয়া তেমন বড় কিছু নয়।
যখন সবাই চলে যায় তখন মাশা বলে যে সে ভারশিনিনকে
ভালোবাসে। এতে ওলগা অনেক ভারাক্রান্ত হয়। এবং মাশা বলে যে সে এব্যাপারে আর একটি
কথাও বলবে না। ইরিনা কর্তৃক ব্যারন টুসেনবার্খকে বিয়ে করার পরামর্শ দেয় ওলগা, যদিও ইরিনা তাকে ভালোবাসে না।
থ্রি সিস্টার্স নাটকের ৪র্থ তথা শেষ অংকে- সৈন্যরা শহর ছেড়ে চলে যায়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওলগা
ইতোমধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হয়েছে। ইরিনা ব্যারন টুসেনবার্খকে ভালোবাসতে
শুরু করেছে এবং তারা অন্যত্র গিয়ে নতুন জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করছে।
অন্যদিকে ভাসিলি সলিয়নি বন্যার টুসেনবার্খকে
দ্বন্দ্বযুদ্ধের আহবান জানিয়েছে কিন্তু এব্যাপারে ইরিনাকে কেউ অবগত করেনি।
টুসেনবার্খ দ্বন্দ্বযুদ্ধে যায় কিন্তু তখনও সে জানেনা সে বাঁচবে কিনা মারা যাবে।
যখন টুসেনবার্খ চলে যায় তখন মাশা এবং কুলিগিনকে
প্রতিজ্ঞা করার যাতে তারা এব্যাপারে কিছু না
বলে। চিবুতিকিনি প্রবেশ করে এবং দ্বন্দ্বযুদ্ধে
টুসেনবার্খ এর মৃত্যুর সংবাদ দেয়। ইরিনা ভেঙে পড়ে তবুও সে অন্যত্র কোথাও গিয়ে কাজ
শুরু করার প্রতিজ্ঞ করে। তিনবোন একত্র হয় এবং তাদের হতাশাজনক ভোগান্তির কথা পরস্পর
বিবেচনা করে।
সহায়ক গ্রন্থাবলি-
১) থ্রি সিস্টার্স | অনুবাদ- প্রৈতী হক
থ্রি সিস্টার্স নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ
লিখেছেন- মো. এনামুল হাসান কাওছার
শিক্ষার্থী- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
No comments