স্রোতের বিপরীতে চলো, দেখো কয়জন থাকে পাশে?
স্রোতে তো কচুরিপানাও ভাসে-
আজ এক স্রোতের বিপরীতে চলা মানুষের কথা বলব।
কারণ আমিও স্রোতের বিপরীতে চলতে ভালবাসি।
শেখ মুজিব কোট পড়া লোকটি ধানের শীষে ভোট চান,
আর লাখো সরকারবিরোধী কর্মীর সামনে আঙুল উঁচিয়ে বলে যাচ্ছেন ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’।
ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনে জিতলেনও।
আমরা ট্রল করা ব্যাক্তি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি না।
উনি আশির দশকে রাজপথ কাপাঁনো বাংলাদেশে ছাত্রলীগের সভাপতি যিনি ৭৫-এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বঙ্গবন্ধুর ছবি লাগান।
১৯৮৯ সালে ডাকসু’র ভিপি পদে তার বিজয় ছিল ’৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনো জয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের তিনি একমাত্র ছাত্রলীগ সভাপতি যিনি ডাকসুর ভিপি।
পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় সসস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে।অস্ত্রও তুলে নিয়েছিলেন হাতে।
সেই প্রতিরোধের কারণে শাসকদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়ে জীবন বাঁচাতে এবং আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দীর্ঘ চারটি বছর না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, নির্ঘুম অনেক রাত কাটিয়েছেন ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের পাদদেশে ঘন বনাঞ্চল ঘেরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ।দেশ ছাড়তে হলো তাকে।
১৯৯৬ সালে জয় লাভ করে তিনি আওয়ামিলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক লাভ করেন।
১/১১-এর পর সংস্কারপন্থী হিসেবে তাকে আখ্যায়িত করা হয়। সে সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত তোফায়েল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ অনেকেই দলে ফিরে আসেন। কিন্তু ফিরে আসতে পারেননি ‘৭৫ পরবর্তী পরিস্থিতিতে অস্ত্রহাতে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধের ডাক দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং আশির দশকের কঠিন সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিকে সক্রিয় ও সুসংগঠিত করার এই কারিগর।
বি এন পি আমলে শেখ মুজিবকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যিনি স্থান দিলেন তাকে ১/১১ এর সংস্কারপন্থী দায়ে মনোনয়ন বঞ্চিত হলে তিনি নির্বাচন করেন এবার মুজিব কোট গায়ে ঐক্যফ্রন্ট এর ধানের শীষ প্রতীকে,আর জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু মুখে।
মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীক কখনও জয়ী হতে পারেনি। এমনকি কখনও তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আসতে পারেনি বিএনপির কোনও প্রার্থী। এমনকি ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে দুইবার জামানত হারায় বিএনপি।
২০০৮ তে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি তিনি। সে নির্বাচনে নৌকা পেয়েছিল মাত্র ২ হাজার ভোট।
যে আসনে ধানের শীষ জিতে নি কোনদিন
সে আসনে ২০১৮ সালে মুজিব কোট পড়ে ধানের শীষে নির্বাচনে জয়লাভ করলেন।
কিন্ত মুজিবের আদর্শে থেকে বিচ্যুতি হোন নি,অভিমানে মুজিব কোট খুলে রাখেন নি,ধানের শীষে ভোট চাইলেও মুখে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলতে ভুলেন নি।
ড. কামালদের মতোন সুবিধাবাদী হোন নি।
১৯৬৮ সাল থেকে শেখ মুজিবের রাজনীতি আদর্শে লালিত স্রোতের বিপরীতে চলা মানুষটির নাম সুলতান মনসুর।
গণফোরামের দলের প্রার্থী হয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচনে জিতলেন তিনি।
ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে গিয়ে ভোটে জিতলেন,
নির্বাচনে জয়লাভ না করে উলটা যারা হেরে সাংসদ নির্বাচন হয়েছেন, তাদের সাংসদে শপথ নিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।
নির্বাচনে যারা জয়লাভ করার পর জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার জন্য সাংসদে শপথ নিলে যদি ঐক্যফ্রন্ট থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অই বহিষ্কার হওয়ার জন্য বিজয় মিছিল করা উচিত সুলতান মনসুরের।
যারা সাংসদে জিতবে না তারা তো সংসদে তো ঢুকতেই পারবে না
আর যারা জিতবে তারা শপথ নিতে দিবে না,
শেয়ালের লেজ কাটা গল্পের মতন।
সংসদে শপথ নেয়ার সাহসী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়...
- শাকিল চৌধুরী
জবি ছাত্রলীগ
No comments