উপন্যাস- নেভার লাভ আ স্ট্রেন্জার (Never Love a Stranger) । বুক রিভিউ । নাসিম আহমেদ
বুক রিভিউ :
উপন্যাস: নেভার লাভ আ স্ট্রেন্জার (never love a
stranger).
লেখক: হ্যারল্ড রবিনস
অনুবাদক : সাইদ চৌধুরী
ভূমিকা:
বাবা মা হারানো একটি ছেলে এতিমখানায়
বড় হয়। স্কুলে ভর্তি হয়। সবার
লাথি খেয়ে উঠে দাড়ানো, লাথি খেয়ে লাথি মারা, প্রতিকূল পরিবেশে
বেড়ে ওঠা,
ছোট কালের
মধ্যেই পতিতালয়ে আগমন, ভালোবাসা দেয়া নেয়ার মধ্যে পটভূমি গড়ে ওঠে।
পূর্বকথা:
স্বামী হারা ফ্রান্সিস কেইন যখন নিউ
ইয়র্ক শহরে আগমন করে তখন সে সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুতহীন অন্তসস্ত্বা। সেই শহরে ছিলেন শিক্ষিত নারী ক্যাজেলিনোর বাসা। কোন এক বিকাল বেলা প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে
ক্যাজেলিনোর বাসায় আসে ফ্রান্সিস কেইন। দুজন মেয়ে সন্তানের মা ক্যাজেলিনো পড়ে যায় বিপাকে। কারন দুই মেয়ে কখনই একসাথে একই রুমে থাকার মতো
স্বভাবের নয়। দুটি রুম থাকা সত্ত্বেও তিনি কেইন কে
থাকার আশ্রয় দেন। আর কেইন যেহেতু গর্ভবতী ছিলেন এবং
প্রসবেরর ব্যাথায় কাতর তাই থাকতে না দিয়ে কোন উপায় ছিল না। এক মহিলা
হয়ে অন্য মহিলার উপর এরকমি তো সহমর্মিতা হওয়া উচিত। ঘটনা
বহুল সে রাতে বাচ্চা প্রসব করে ফ্রান্সিস কেইন। পাশে ছিল
শহরের ডাক্তার ও গির্জার ধর্মযাজক। বাচ্চা জন্মদানের
পরপরই সে অসুস্থ হয়ে যায় তখন ক্যাজেলিনো সে মহিলার নাম শোনার জন্ম উদগ্রিব হয়ে ওঠে। কারন মায়ের নাম না শুনলে তো সে সন্তানটি সারাবছর
নামহীন থেকে থাকে। কোন রকম তার নাম বলে দিয়ে না ফেরার
দেশে চলে যায় সন্তান জন্মদানের সময় পাশে না থাকা ফ্রান্সিস কেইন। আর ডাক্তার সাহেব মা বাচানোর চেয়ে সন্তানের
বার্থ সার্টিফিকেট লেখানোই যেন বড় মনে করলেন। তাই আর
মাকে বাচাঁনো গেল না। মায়ের নামানুসারে ছেলের নামও হলো
ফ্রান্সিস কেইন।
পিতা মাতা হীন ফ্রান্সিস কেইন ভর্তি
হয় সেইন্ট টেরিসি গির্জায়। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। ক্লাসের
সবার মাঝে সে ছিল সব চেয়ে বেশি দুষ্ট। প্রথম দিনেই তার সামনে বসা সহপাঠীকে থুথু দেয় কেইন। সিস্টার অ্যানি তাকে সামনে ডেকে পাঠায়। থুথু মারার অপরাধে নয়। বরং সে দিন কার বার, তারিখ মাসের নাম
বোর্ডে লেখার জন্য সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুলে ছিল ব্রাদার
বার্নওয়ার্ড। তিনি প্রথম দিকে কেইনের ওপর চড়াও হলেও
পরে খুব ভালোবাসে। স্কুলের আবাসিক আশ্রয়ে থাকার সময়েই
কেইন জুতা পালিশের কাজ করে টাকা জমানো শুরু করে। মাঝে
মাঝে তার ডলার এই চলত অন্য বন্ধুরা। তার কাছ থেকে সবাই
ডলার ধার নিত। এমনি তার এক বন্ধু ছিল পিটার স্যারপোরা। সে কেইনের কাছ থেকে
২০ ডলার ধার নিয়ে ফেরত দিতে না স্বীকার করে। এটা নিয়ে কেইনের
মারামারি বাধে। সে স্যানপোরা কে জখম করে তার ২০ ডলার নিয়ে বাকিটা তার পকেটেই রেখে দেয় সবার
সামনে। এটা নিয়ে ব্রাদার তাকে সাধুবাদ জানায়। অন্য দের তুলনায় কেইন ছিল শক্তিশালি। বুদ্ধিমান, চতুর,
পরিশ্রমী ও
অধ্যাবসায়কারী। তার এক বন্ধু ছিল নাম রে। সেও কেইনের মতো
জুতো পালিশের কাজ করে। সে খোজ নেয় রে র আয় রোজগার কেমন চলছে। রে জানায় তার আজ ভালো হয়নি। তাই সে
তার সাথে বাসায় কেইন কে যেতে বলে। রের বাবা ছিল
মাদকাসক্ত, রে তার মাকে যে টাকা দিত তিনিও তা উড়াতো। যদি শোনে
রে আজ কম আয় করেছে তাহলে তাকে মারবে। তাই কেইন কে যেতে
বলে। সে গেলে তাকে মারবে না। রের
বাসায় যায় কেইন। সেখানে এক মহিলার সাথে তার পরিচয় হয়। মহিলা যে পতিতা ছিল তা সে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই
টের পায়। দুই ডলারের বিনিময়ে কেইন তার বিছানায়
যেতে চায়। মহিলা রাজি হয়। কিন্তু ছোট কেইন তার সাহস কুলাতে পারে
না। বড় হয়ে আসতে বলে সে মহিলা। পরে চুরি
করে দু ডলার নিয়ে নেয়। তার মতে, সে তো কাজ করেনি। এমনিতে তাই টাকা
দিবে কেন। এভাবেই সমাজের সকল মানুষের সাথে সে
মিশতে থাকে। একদিন এক সেলুনে গিয়ে জুতা পালিশের
সময় বড় অপমান করে তাকে বেড় করে দেয়া হয়। পরে এক ভদ্র
পুরুষের সম্মুখে পরে যায়। কেইন কে ভালো লাগে তার। কারন তিনিও আগে
একাজ করত। জুতা পালিশ ছাড়াও কেইন কে তিনি ৫ ডলার
বেশি করে দেয়। তার নাম ছিল ফেনেলি। রাস্তায় একদিন এক ছেলের সাথে তার মারামারি হয়। কেইন জিতে যায়। ছেলে টির
নাম ছিল মার্টিন। মার্টিন হেরে গিয়েও কেইন কে ভালো বাসে। সে ফ্রান্সিস কেইনের কাছে boxing শিখতে চায়। ফ্রান্সিস রাজি হয়। মার্টিন কেইন কে
সাথে করে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। মার্টিনের বাবা ছিলেন পেশায় ডাক্তার। তার
বোনের নাম হলো রুথ। মার্টিন কে বক্সিং শেখানোর সময় সে আহত
হয়। মার্টিন ফ্রেশ হতে গেলে তাদের কাজের মেয়ে জুলি
ফ্রান্সিস কেইনের কাছে চলে আসে। কেইন কে তার খুব
ভালো লাগে। সেও boxing
শিখার আগ্রহ প্রকাশ করে। দুজনের
মধ্যে মন দেয়া নেয়া হয়। দুজন দুজনের মনের ভাব বুঝতে পারে। একে অন্যকে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করে। চুমুতে ভরে ওঠে
দুজনের ঠোটঁ। ভালবেসে ফেলে দুজন দুজনকে। পরে মার্টিন রুমে আসার পরপরই তারা নিজেদের ছেড়ে
নেয়।
মার্টিনেরর আহত এর ব্যাপারটা রুথের
পছন্দ হয় নি। সে কেইন এর উপর রেগে যায়। ফ্রান্সিস কেইন বাসা থেকে বের হবার সময় রুথ তাকে
হুশিয়ার করে দেয় যেন তার ভাইয়ের সাথে সে না মেশে।
পরবর্তিতে ফ্রান্সিস কেইন একটি
দোকানে চাকরি নেয়। কাজ ছিল জুয়ার হিসাব রাখা। বাথরুম, ঘর ঝাড়ু দেয়া। এতে সে ভালো মাইনে
পায়। স্কুলের পাশাপাশি একাজ তার ভালো আয়ের উৎস হিসেবে
কাজ করে। তা দিয়ে সে ভালোই দিন কাটায়। যে দোকানে সে কাজ
করে সে মালিকের নাম হলো কেওয়াফ। ঐ দোকানে মাঝে
মধ্যে ফেনেলি আসত। সে তাকে অনুপ্রেরণা দিতো। বলত লেগে থাকো বড় হতে পারবে। সেও জুয়া, বাজির কারবারিতে ছিল। কোন একদিন বন্ধু মার্টিনেরর আমন্ত্রণে
সে তাদের বাসায় যেত। সেখানে জুলির সাথে তার কিছু অন্তরঙ্গ
মুহুর্ত কাটত। তারা ভালোবেসে ফেলেছিল। যদিও কেইনের চেয়ে জুলির বয়স বেশি ছিল। কিন্তু ভালোবাসা তো
আর বয়স কাল মানে না।
স্কুলে তার অন্য এক বন্ধুর নাম ছিল
জেরি। তার বাবা ছিল মেয়র। বন্ধের
মধ্যে সে কেইন কে তাদের গ্রামের বাসায় যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু
কাজের জন্য সে তা প্রত্যাখ্যান করে।
বাজির টাকা আদার করে কেইন তার মালিক
কেওয়াফ কে দেয়। হিসাব করে দেখে সে ৫১.৫০ ডলার আদায়
করে এনেছে। তাদের আয় হয় ২২.৫০ ডলার। কেইন পায় ১১.২৫
ডলার।
কোন এক বিকাল বেলা কেওয়াফ ও
ফ্রান্সিস কেইন দোকান বন্ধ করে বের হয়েছে এমন সময় ফেনেলি গাড়িতে চড়ে তাদের কাছে
চলে আসে। তখন মেওয়াফের কাছে অনেক টাকা ছিল, যা ছিল সারাদিনের আয়। তিন জন এক জায়গায়
হতেই অতর্কিত গুলি বর্ষণ। টাকা গুলো পড়ে যায়। জীবন বাচাঁতে কেইন দৌড় শুরু করে। দৌড়ে সে মার্টিন
দের বাসায় চলে আসে। তখন জুলি ছাড়া বাড়িতে কেইমউ ছিল না। ওখানে সব খুলে বলে সে। রাত হলে
এতিমখানায় সে ফিরে আসে। সে দিন খুব চিন্তায় দিন কাটে তার। খবরে শুনতে পায়
মালিক কেওয়াফ মারা গেছেন। ফেনেলি শঙ্কামু্ক্ত। তার ভয় হয় এতে তাকে পেকে পাঠানো হবে কিনা। তাকে আদালতে যেকে হবে কিনা। নানা রকম
প্রশ্ন তার মনে উদ্ভব হয়। একদিন তাকে স্কুলের অফিস রুমে ডেকে
পাঠানো হয়। সে দেখতে পায় নতুন কিছু লোক চলে এসেছে। সে ভয় পেয়ে যায়। তাকে বিভিন্ন
প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু সে গুলো ঐ গুলাগুলির জন্য নয়। একজন লোক তার খোজ পেয়েছে যে তাকে মামা ভাগ্নে
পরিচয় দিয়েছে। বলেছে অনেকদিন আগে তার বোন এই নিু ইয়র্ক চলে আসে। সাথে ছিল
তার স্বামী। পরে তাদের কোন খোজ পাওয়া যায় নি। লোক টার নামও ছিল ফ্রান্সিস কেইন। তার নামানুসারে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে তার মামার
হাতে তুলে দেয়।
বিদায় বেলায় কেইন অনেক কষ্ট পায়। সে যেতে চায় না। সিস্টার অ্যানি, ব্রাদার বার্নওয়ার্ড, ফাদার কেইন তার
উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে। তাদের ও অনেক কষ্ট
হয় কেইন কে ছেড়ে দিতে গিয়ে। পরে মামা তাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। তা র মামী ছিলেন খুবি আন্তরিক। তার দুজন মামাতো
বোন ছিলেন।
এতো দিন আত্মীয় স্বজনহীন থাকার পর
তাকে খুব ভালো লাগছে। স্কুলে থাকা অবস্থায় অনেকে তাকে গালি দিত জারজ সন্তান বলে। তার কষ্ট হতো বাট
কিছু বলত না। সব সহ্য করে যেত। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশে এসে
তাকে ভালোই লাগছে।
ফ্রান্সিস কেইন মামার বাসায় আমার পর
সব কিছু ধীরেধীরে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তাকে নতুন একটা
স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়। প্রতিদিন যাওয়ার সময় মামী কিছু ডলার তার হাতে ধরিয়ে দেয়। এখানে থাকা অবস্থায়
তার বন্ধুরা খোজ নয়। সে স্কুলেও তার বন্ধু ছিল জেরি, মার্টিন। নতুন স্কুলে সবাই তাকে সাদরে গ্রহণ করে। তার মাঝে যে নেতৃত্বের গুণ আছে সেটা সবাই মানিয়ে নেবার
চেষ্টা করে। ক্লাস ক্যাপ্টেন নির্বাচিত করার সময় চলে আসে। কেইন
নির্বাচনে দাড়াবে না। বাট জেরি আর মার্টিন তাকে ছাড়বেই না। জোর করে তাকে দাড়ঁ করে দেয়া হয়। নির্বাচনের দিন যে বক্তৃতা দিতে হয় সেটাও জেরি ও
মার্টিনের বানিয়ে দেয়া। মানুষ সচরাচর যে বক্তব্য দিল সেটা না
দিয়ে ভিন্নরকম কিছু কথ বলল সে। স্কুলে যে মেয়ের সাথে তার ভাব হতো। সেও
দাড়াঁয় । পরে কেইন কে ক্যাপ্টেন ও তার পছন্দ
করা মেয়েকে সহকারি করে দায়িত্ব দেয়া হলো। বলে রাখা ভালো মামার বাসার আগেই সে তার উপার্জিত ডলার
ব্যাংকে জমা রাখে। ।
একদিন সে দেখতে পায় তার মামা মামির
মন খুব গম্ভীর। তাদের কথোপকথন শুনে বুঝতে পারে তার
মামার যক্ষ্মা হয়েছে। তারা না বলতেই কেইন সব জেনে যায়। তার জমানো ডলার তাদের তুলে নিতে বললে তারা অস্বীকৃতি জানায়। তার মামি তাকে জানায় এই বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন
নতুন বাসায় যাবে। আর এজন্য কিছু অর্থ ও দেনদরবার মেটাতে হবে।
একদিন তার মামা এসে গম্ভীর গলায় তাকে
বলে যে,
আমরা নতুন বাড়িতে গেলে সেখানে তোমাকে নিয়ে যেতে পারবনা। কারণ এতিমখানার
নিয়ম হলো,
কোন সন্তান নিয়ে যাবার পর যদি ছোয়াচে রোগ বা অন্য কোন রকম
রোগ হয় তাহলে সে সন্তান কে এতিমখানায় ফেরত দিতে হবে যত দিন না পর্যন্ত তার ১৮ বছর
পূর্ণ না হয়। আর মার্টিনেরর ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি সেকারণে তাকে সাথে নিয়ে যেতে পারবে না তারা। কেইনেরর মন খুব
খারাপ হয়ে যায়। বহুদিন পর আত্মীয় স্বজন পেয়ে তাদের আবার ছাড়তে হবে। মামা মামি নতুন বাড়িতে চলে যায় কেইন কে পুরাতন জায়গায় রেখে। সে কষ্ট পায়। তার মন সেখানে টিকতে পারে না। মামা মামি ভাই
বোনদের খুব মিস করে সে।
এতিমখানা তার কাছে হলো জাহান্নামেরর
মতো। খাচাঁয় বন্দি জীবন
এটা। তাই সে রাতের
অন্ধকারে পালিয়ে স্টেশনে চলে যায়। জমানো ডলার দিয়ে টিকেট কেটে বাল্টিমোর শহরে চলে যায়। অপরিচিত জায়গা। থাকার মতো বাসা নাই। চেনা পরিচিত লোক
নাই ডলার ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা যেন নতুন করে সব শিখিয়ে দিচ্ছে। সকালের খাবারের পর সে বাসা খুজতে বের হয়। টু লেট দেখে এক
বাসায় এসে সে নক করে। কিছুক্ষণ পরে
বিরক্তিকর অবস্থায় দরজা খুলে দেয় একজন বৃদ্ধা। বাসা
ভাড়ার কথা বললে তিনি বলেন রুম ফাকা নাই। ফেরত আসার সময় বৃদ্ধা তাকে ডেকে নেয়। সুস্থ সবল কেইন কে তার পছন্দ হয়। ভেতরে গিয়ে বুঝতে
পারে তিনি এক পতিতা। সে বের হতে ধরলে তাকে বুঝিয়ে একটা চাকরি দেবার কথা বলা হয়। তার কাজ হলো যেসব
খদ্দের আসবে তাদের কাছ থেকে ঠিকমতো ডলার নেয়া আর বেশি মাতাল হলে তার ব্যবস্থা নেয়া। সব পতিতার সাথে তার
পরিচয় করে দেয়া হয়। প্রথমে একজন ছোট ছেলে মনে করলেও সে তার শক্তি প্রদর্শন করে একজন পতিতাকে
মাটিতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে। বৃদ্ধা খুশি হয়। তাকে নতুন কোট, প্যান্ট, শার্ট কিনে দেন। যা প্রথম মাসের মাইনে থেকে কেটে নেয়া হয়। তার মাসে
বেতন হয় ১৫ ডলার। । দুদিন থাকার পর তার ভালো লাগে না। নিজেকে পাপি মনে করে সে। বের হতে চায় এখান থেকে। একদিন চাকরি খুজতে US defence এ সে দরখাস্ত করে। তার বয়স চাওয়া হয়। জন্মতারিখ দেয় ১০ মে, ১৯০৯.।
মানে এখন তার বয়স ১৮। । সুতরাং সে যোগ দিতে পারবে। পরে সিগনেচারের দরকার হলে সে বৃদ্ধার কথা বলে
নিজে তাতে সই করে। মেডিকেল টেস্টের পর সে সেনাবাহিনী তে যোগ দান করে। বাড়ি
ছাড়ার সময় সেই বৃদ্ধা তাকে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করে। বেতন ও বেশি দেয়ার কথা জানায়। তার কোন সন্তান ছিল
না। তাই বিশ্বস্ত একজন
লোক তার দরকার ছিল সম্পত্তি দেখা শোনার জন্য। সে চলে
যায় সেনাবাহিনীতে।
সেনাবাহিনীতে কয়েকবছর কাজ করার পর সে
সেখান থেকে অব্যাহতি নেয়। ছেড়ে দিয়ে এসে নতুন একটা বাসা নেয়। সাথে তার মামা মামী কে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেয়। সর ভেবে নেয় এর উত্তর আসলেই সে চলে যাবে তাদের কাছে। আর সেজন্য সে নতুন
প্যান্ট,
টাই, কোর্ট কিনে রাখে। কিছুদিন পর পিয়ন
এসে বলে এ ঠিকানায় কাউকে পাওয়া যায় নি। তাই এটা ফেরত এসেছে। কেইন হতবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকে। সে অনেক চেষ্টা করে বাট কোন লাভ হয়নি। কিছুদিন বসে খেয়ে
যখন তার হাত খালি হয়ে যায় তখন নতুন চাকরির খোজে বের হয়। নতুন একটা রুম ভাড়া করে। সে ফ্লাটের একজন কর্মীর সাথে তার ভাব হয়। তাকে সাথে নিয়ে সে
পার্টিতে যায়। ফেরার পথে গাড়িতে চুমুতে ভরে ওঠে
দুজনের ঠোটঁ। এর বেশি কিছু করতে পারে না গাড়িতে। রুমে তারা সে রাত
এক সাথে থাকে। ভালোবাসায় ডুবে যায় সে রাত। সকালে ঘুম ভাঙতেই ঘটে মহা প্রলয়। দেখে মেয়েটি বিছানায় নেই। সব শূন্য করে দিয়ে চলে গেছে সে। এখন সে রুমের বিল
পরিশোধ করবে কি করে?? খাবেই বা কি। নিচে এসে সব বললে
কিছুই করতে পারে না তারা। কারণ মেয়েটি একদিনের জন্য কাজে এসেছিল। নিরুপায় হয়ে নতুন কাপড় গুলো তাকে জমা রাখতে হয়। পড়ে বরফ সরানোর কাজ
করে সে। সেখান থেকে কিছু
ডলার পায় সে। সে মামার কাছে যেতে চায় বাট পারে না। কারন তাদের ঠিকানা সে জানে না। পরে সে একটি দোকানে বাড়িতে খাবার বেয়ার করার
চাকরি পায় এতে করে একজন মহিলার সাথে তার প্রেম হয়। তাকে সে খুব ভালোবাসে কিন্তু সেও চলে যায় ধোকা
দিয়ে।
নতুন দোকানে কাজ করতেই তার বন্ধু
জেরো হয়ে যায়। জোরোকে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাচাঁনোর জন্য জোরোর প্রেমিকা মারিয়ানি কেইন কে খুব
পছন্দ করে। দুজন প্রেমে পরে যায়। কিন্তু তখনও জোরো ছিল। মারিয়ানি ছিল একজন
চিত্রকর। সে কারণে কেইন কে সে চাকরি ছাড়তে বলে। আর সেজন্য কেইন
চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়।
ফ্রান্সিস কেইন নতুন চাকরির খোজ করলে
মারিয়ানি তাকে বাসায় বসে থাকতে বলে। তাকে সে চাকরি করতে দিবেনা। এদিকে বসে থাকতে থাকতে কেইন অস্থির হয়ে যায়। সে তো বসে থাকার ছেলে নয়। রাতে কেইন কে সাতে নিয়ে মারিয়ানি পার্টিতে চলে
যায়। সেখানে মারিয়ানি তার বন্ধুর সাথে মজা করলেও কেইন
তা পারে না। সে এক কোণে চুপ করে বসে থাকে। এতে কেইন খুব রেগে যেত। বাসায় এসে রোজ এটা নিয়ে ঝগড়া লাগতো তাদের মধ্যে। পরে কেইন চলে যেতে
বাধ্য হয়। সে মারিয়ানির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নতুন কোন অজানা জায়গার উদ্দেশ্যে পাগি জমায়। । মারিয়ানি তার
উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে বিদায় জানায়। ফ্রান্সিস কেইন ও জানায় কখনই সে মারিয়ানি নামের মানুষটাকে
ভুলে যাবে না।
বি: দ্র:
এতো বড় উপন্যান থেকে সংক্ষেপ করে
কয়েকটা লাইন লেখা খুবই মুশকিল। তবুও চেষ্টা করেছি
সাধ্যের মধ্যে কিছু ঘটনা তুলে ধরার। না পড়ে বোঝা যাবেনা
উপন্যাসটির মধ্যে কত রস ছিল।
No comments