গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা- ঐতিহাসিক নাটক
গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা- ঐতিহাসিক নাটক
মূল নাটক প্রণেতা - শ্রী শান্তিরঞ্জন
দে
চরিত্র পরিচিত -
১) ভূতপূর্ব বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন
মোবারক শাহ্(তিনি আততায়ী কর্তৃক নিহত হন)
২) সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ - বাংলার
সুলতান
২) সায়রা- ভূতপূর্ব সুলতান আলাউদ্দিন
মোবারক শাহের কন্যা
৩) জেবউন্নেসা- ভূতপূর্ব সুলতান
আলাউদ্দিন মোবারক শাহের বেগম
৪) কিঙ্করনাথ- বাংলার সুলতান
সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের উজির
৫) অম্বর - কিঙ্করনাথের পুত্র
৬) কমলা- অম্বরের স্ত্রী
৭) সহদেব- বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন
মোবারক শাহের পাইক সর্দার
৮) মকবুল- কবিয়াল
৯) বাতাসী - গ্রাম্য মেয়ে
১০) আমজাদ- সম্রাটের দ্বাররক্ষী
১১) জাফর খাঁ- সোনারগাঁ ও সাতগাঁয়ের
শাসনকর্তা
১২) ফিরোজ শাহ্ তোঘলক- দিল্লীর
সম্রাট
১৩) মামুদ- দিল্লীর সম্রাট ফিরোজ
শাহের পুত্র
১৪) তাতার খাঁ- দিল্লীর সম্রাট ফিরোজ
শাহের প্রতিনিধি
১৫) কাইউম খাঁ - দিল্লীর সম্রাট ফিরোজ
শাহের প্রতিনিধি তাতার খাঁর ভাই
১৬) হিসামুদ্দিন- গুপ্তচর
কাহিনী সংক্ষেপ-
দিল্লীর সম্রাট ফিরোজ শাহ্ তোঘলকের
প্রতিনিধিরূপে পূর্বাঞ্চল তথা বাংলাদেশের শাসনকর্তা হিসেবে রাজ্যপরিচালনা করতেন
সুলতান আলাউদ্দিন মোবারক শাহ্ এবং সম্রাটের দূত হিসেবে বাংলায় নিযুক্ত ছিল তাতার
খাঁ।লোভাতুর তাতার খাঁ বাংলার সিংহাসন দখলের জন্য কালোচিত ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নের নিরিখে এক রাত্রে ধূর্ততার সহিত হত্যা করে সুলতান আলাউদ্দিন
মোবারক শাহ্কে।
প্রজাদের সমর্থনে পরলোকগত সুলতানের
পালকপুত্র সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ গঙ্গা
থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত সম্রাজ্যের স্বাধীন অধীশ্বর হন ফলে তাতার খাঁ এর
ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয় ; তাতার খাঁ দিল্লিতে
পালিয়ে আত্নরক্ষা করে। কিন্তু,আলাউদ্দিন মোবারক
শাহ্ এর বেগম জেবউন্নেসা ইলিয়াস শাহ্কে নিহত সুলতানের আততায়ী হিসেবে সন্দেহ
করেন।
নিহত সুলতানের হত্যার প্রতিশোধের
আগুনে জর্জরিতা বেগম জেবউন্নেসা এবং পিতার শোকে উন্মাদিনী তনয়া সায়রাকে সাহায্যের
নামে দিল্লীর সম্রাটের নির্দেশমতো বাংলা দখলের ষড়যন্ত্রে পুনরায় তাতার খাঁ মত্ত
হয়।
স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য
বিদেশিদের সঙ্গে যোগদেয়া জেবউন্নেসা,অম্বর, জাফর খাঁ সহ কতিপয় বাঙালির সহযোগিতায় দিল্লির সৈন্যদল
অতর্কিতভাবে বাংলা আক্রমণ করে নিরীহ প্রজাদের হত্যা এবং বাঙালি মেয়েদের
সম্মানহানির ঘৃণ্য নৃশংসতায় মেতে ওঠে।
তাতার খাঁ, জেবউন্নেসা এবং জাফর খাঁ কে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে
বাংলার পবিত্র ভূমি থেকে বাঙালিদের অস্তিত্ব মুছে দিতে উদ্ধত হয়।
প্রকৃতির কাছ থেকে আজন্ম বিদ্রোহের
পাঠ গ্রহণকারী নদীমাতৃক বাংলার স্বদেশপ্রেমে ব্রত নারী পুরুষ তথা মিলিত সাধারণ
হিন্দু-মুসলমান প্রজারা জীবন বাজি রেখে বহিঃশত্রু মোকাবিলায় এগিয়ে আসে; দেশমাতার অবমাননা আর বহিঃশত্রুর নির্মমতায় স্বীয়
স্বার্থত্যাগ করে মাতৃভূমি রক্ষায় প্রত্যেক বাঙ্গালি ঝাঁপিয়ে পড়ে, এমনকি দিল্লির শাহজাদা মামুদও বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান
নেন।
পরিশেষে, নদীমাতৃক বিদ্রোহী প্রকৃতির আশীর্বাদে অনেক ত্যাগ আর রক্তের
বিনিময়ে গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্বাধীনতার পতাকা উড়ান শাহী বাংলা সুলতান সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ্।
লিখেছেন-
মো. এনামুল হাসান কাওছার,
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
No comments