দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

বুক রিভিউ : মালঞ্চ ( উপন্যাস) লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


বুক রিভিউ : মালঞ্চ ( উপন্যাস)
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ফুলের বাগানের ব্যবসায়ী আদিত্য। তার সাথে বিয়ে হয় নীরজার। সংসার ভালোয় চলছিল কিন্তু কোন এক কারণে নীরজা অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে যায়। সেই থেকেই শয্যাশায়ী হয়েই তাকে দিন রাত কাটাতে হয়। তারও আগে আদিত্য সহ সে বাগানে এক সাথে কাজ করত। চারা লাগাত,ফুল তুলত,টপে পানি দিত। আদিত্যের বাগানে সব ধরনের সহায়তা করতে নীরজা। কিন্তু অসুস্থ হবার পর থেকে সে আর পারে না।
বলে রাখা ভালো দশ বছরের সংসার জীবনে বড় অতৃপ্তি টায় আছে তাদের ঘর জুড়ে। সবি আছে, নেই শুধু একটি সন্তান। যাই হোক আদিত্যের জেঠোমশায় মারা যাওয়ার আগে কিছু জমি ও টাকা কড়ি ধার দিয়ে যায়। কিছু টাকা নাকি ঋণ করেও নাকি আদিত্যকে দিয়ে যান তিনি। এটা ঠিক,বাগান করার সময় তার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা ছিল না।
বাগানের ফুল তুলে ভোর বেলায় আদিত্য সেগুলো শহরে নিয়ে যেত। নীরজা পছন্দ ফুল পছন্দ করত। তাই সে প্রতিদিন নীরজা কে একটি করে ফুল দিতো।
কিন্তু একদিন একটা কাজের চাপে ফুল দিতে পারে নাই আদিত্য। সে চলে যায় শহরে। মালীকে দিয়ে ফুল টা নীরজা কে দেওয়ায়।
হলা নামের এক মালী ছিল বাগানে। সেও ভালোয় কাজ জানত। মালিক না থাকলে বাগানেরর কর্তা যেন সে বনেঁ যায়। কখনো বা মালিকের অনুপস্থিতিতে ফুলের চোরা বেচাকেনা করে তারা। রোশনী ছিল নীরজার সেবক। সেও বাগানে কাজ করত।
মাঝে মাঝে শুয়ে থেকে সব কাজের লোক কে সে তদারকি করে এবং হুকুম অনুসারে কাজ করিয়ে নেয়। তার পরে কোন এক বিকালে হারানো দিন গুলোর জন্য মন খারাপ করে উদাস হয়ো বসে থাকে।
একটা কথা বলা হয়নি,তা হলো বাড়িতে ছিল সরলা নামের এক মেয়ে। সে ছিল আদিত্যের জেঠোমশায়ের মেয়ে। তাদের মাঝে সম্পর্ক ভাই ভাই। বন্ধুর চেয়ে বেশি। একজন ছাড়া অন্যজন অচল। নীরজার দেবর ছিল রমেন। দশ বছরের বিবাহিত জীবনে সরলাকে সে যেন নতুন ভাবে দেখল। তার মাথায় আসল দেবর রমেনের সাথে সরলার বিয়ে টা মন্দ হবেনা। কথাটা সে স্বামী আদিত্যকে বললে সে আশ্চর্য হয়ে যায়। সে এ বিয়ে দিতে অমত জানায়। পূর্বেই সরলা ও আদিত্যের ব্যাপারে তার সন্দেহ জাগে। তাদের এক সাথে চলাফেরা মেলামেশা তার খটকা লাগে। স্বামী আদিত্যকে সরলার ভালোবাসার কথা জানতে চাইলে সে অকপটে তা বলে দেয়। সরলার বাবার সাহায্য ছাড়া যে এ সংসার ভালো কাটত না, এ বাগান হতো না তা সে মনে করিয়ে দেয়।
স্ত্রী নীরজার সাথে তার বিয়ের দশ বছর কিন্তু সরলার সাথে তার তেইশ বছরের সম্পর্ক। অসুস্থ নীরজা আরো বেশি ভেঙ্গে পরে। দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। নীরজার কথা সে যেন সরলার সাথে আর কখনো না মেশে।
পরের দিন দিঘী পাড়ে সরলা ও রমেন কথা বলে।সরলা তার সব মনের কথা বলে দেয় রমেন কে। এও কথা হয় দুজনে পালিয়ে যাবে তারা( কি যেন একটা আন্দোলন চলছিল জেল হলেও তারা দুজনে সেটায় যাবার প্লান করে)।
আদিত্য চলে আসলে রমেন চলে যায় বউদির কাছে। পরে সরলা ও আদিত্যের মিঝে কথা হয়। কথা হয় হারানো ফেলে আসা দিনগুলো নিয়ে। কথা হয় কত খুনসুটি দিয়ে ভরানো তাদের জীবন। পরে রমেন ও সরলা চলে যায়। কথা ওঠে তাদের জেলে আটক করে রাখা হয়েছে। এদিকে নীরজার সাথে তার স্বামীর কথা হয়। আদিত্য মনে মনে জ্বালায় মরে যায়। নীরজা তার ভুল বুঝতে পারে। সে চায় সরলাকে।যাকে সে সতীন হিসেবেও মানিয়ে নিবে। নীরজা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পরে। সে কাছে চায় সরলাকে। মৃত্যর আগে তাকে দেখতে চায় তার মুখখানি। সরলা জেল থেকে ছাড়া পেলে তাকে বাড়িতে আনা হলো। তাকে আদিত্যের হাতে তুলে দিয়ে সুখের মরণে ভেসে না ফেরার দেশে চলে গেলেন নীরজা।

No comments

Powered by Blogger.