দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা (ট্রাজেডি) রিভিউ | নাসিম আহমেদ


বুক রিভিউ : অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা (ট্রাজেডি)
লেখক: শেক্সপিয়র





মেসিনাতে পম্পি ছাড়াও মেনিক্রেটাস ও মেনাসের মধ্যে আলোচনা হয়। তাদের কথায়,এন্টনি রোম থেকে আসছে। তারা জোট বদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করবে।মেনাস বলে,এন্টনির বউ সিজারের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছে। তাই তাদের জোট হবে না। পম্পি বলেন,তারা জোট হয়েই আমাদের পরাজিত করার চেষ্টা করবে।

লেপিডাসের বাড়িতে বৈঠক বসেছে। সেখানে ফুলভিয়ার ও তার ভাইয়ের বিদ্রোহের জবাব চাওয়া হচ্ছে এন্টনির কাছে। এন্টনির ভাষায়,তিনি এটার কিছুই জানেননা। পরে সিজার তার বোন অক্টাভিয়ার সাথে এন্টনির বিয়ে দেন। ছোট বোন কে তার হাতে তুলে দেন।
বিয়ের পর এন্টনি কিছুদিনের জন্য বাইরে চলে যাবে।
পরে গণৎকার জানায় সিজার তাকে ঠকাচ্চে। সে যেন রোমে ফিরে যায়।
এদিকে আলেকজান্দ্রিয়ায় রাণী অস্থির হয়ে ওঠে এন্টনির জন্য। সেটা বেশি হয় যখন শুনতে পায় এন্টনি সিজারের বোন কে বিয়ে করেছে। রাণী জানতে চান সে মহিলা কেমন দেখতে? সে কি আমার চেয়ে সুন্দরী? তার মুখ কেমন? তার কথা বলার ধরণ কেমন?


যুদ্ধ শুরুর আগে সিজারের পক্ষ ও পম্পের পক্ষ আলোচনায় বসে। আপোসে মীমাংসা হয় তাদের। পম্পেই এর জাহাজে তাদের রাতের পার্টি বসে। মেনাস জানায় এখানেই তাদের হত্যা করলে কেমন হয়। কিন্তু পম্পে সেটা হতে দেয় না।

এদিকে সিরিয়ার সমতলে এন্টনির সেনাপতি ভেন্টিভিয়াস জয় করে। তাকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করে এন্টনি।
এন্টনি ও সিজারের মধ্যে দ্রুতই ভাঙ্গন শুরু হয়। অক্টাভিয়া কোন পক্ষ নিবে তা নিয়ে সে দ্বিধায় পরে যায়। সে ভাই সিজারের কাছে চলে যায়। সিজার ভাবে এন্টনি হয় তো তার বোন কে তাড়িয়ে দিছে। কিন্তু তার ধারণা ভুল হয়। এদিকে সিজার পম্পের সাথে জল যুদ্ধে জয় লাভ করেছে। এন্টনি সিজারের বিরুদ্ধে অভিযান করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ক্যানাডিয়াস ও এনাকোরবাসের কথা অমান্য করে এন্টনি জল পথে অভিযান করেন। কিন্তু সিজারের বাহিনী এক্ষেত্রে অনেক দক্ষ।
যুদ্ধে এন্টনির শোচনীয় পরাজয় বরণ হয়। একটা কথা বলে রাখা দরকার, জলযুদ্ধে ক্লিওপেট্টার কথাতেই আক্রমণ করা হয়। এন্টনি রাণীর উপর ক্ষিপ্ত হন। রাণী চোখের জল ফেলে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এন্টনি বলেন,চোখের জল ফেলো না,যা হেরেছি বা জিতেছি তা ওই এক বিন্দু চোখের জলের সমান। তুমি আমায় একটা চুম্বন দাও,তাতেই সব ক্ষতির পূরণ হবে। মিশরে সিজারের কাছে খবর আসে,তিনি যেন এন্টনি কে মিশরে সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাকার অনুমতি দেয়া হয়। এবং টলেমির সার্বভৌম রাজমুকুট ধরে রাখার কথা বলেন। সিজার রাণীকে বলেন,তিনি একথা তখনি রাখবেন যখন রাণী নিজে তার বন্ধু এন্টনি কে হত্যা করবে। এন্টনি একথা শুনে রেগে আগুন হয়ে যায়। তিনি দূত পাঠিয়ে সিজার কে দ্বন্দ্ব যুদ্ধ আহব্বান করেন। এটা শুনে সিজারের রাগ দ্বিগুন হয়ে ওঠে। যুদ্ধ এবার বাধেঁ,তবে এটা হবে ডাঙ্গায়। এন্টনি ক্লিওপেট্টা কে বললেন,যদি আমি শত্রুর রক্ত মেখে রনাঙ্গন থেকে ফিরতে পারি, তাহলে সেদিন তোমার মুখে চুম্বন রেখা একেঁ দেবো।
সে রাতে দুজন আগের রাত গুলোর মতো কাটায়।


এদিকে সিজারের কানে চলে যায় তার দূত থাইরিয়াসকে এন্টনি অপমান করেছে। সিজার রেগে আরো আগুন। রণক্ষেত্র তৈরী হয়। তার পূর্বেই এন্টনির বন্ধু এনেবারবাস সিজারের দলে যোগ দেন। এন্টনি সেটা শুনে আশ্চর্য হয়ে যায়। এনোবারবাসের সব জিনিস ও কাপড় তার কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এন্টনি। আর সেটা দেখে এনোবারবাস নিজেকে ধিক্কার দিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করেন।

রণদামামা আর ভেরীবাদের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শুরু হলো। যুদ্ধ এন্টনির অনূকুলে যায়। তার সেনাপতি স্কারাস গুরুতর আহত হলো। সিজার ফিরে আসতে বাধ্য হলো।
পরেরদিন জল ও ডাঙ্গায় আক্রমণের প্রস্তুতি নেন দুপক্ষ। এন্টনি জানতে পারেন ক্লিওপেট্টা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তার বাহিনী সিজারের বাহিনীর সাথে মিলিত হয়েছেন। এন্টনি তা পাহাড়ের উপর থেকে প্রতক্ষ্য করলেন। যেন হারানো বন্ধু অনেক দিন পর উল্লাস করছে। এটা শুনে দেখে এন্টনি সব সৈন্য কে পালাতে বলেন। তাকে ছেড়ে সবাইকে চলে যেতে বলেন। এন্টনি রাণীকে অনেক রাগ দেখায়। রাণী প্রাসাদে চলে আসেন। এদিকে খবর আসে রাণী আত্মহত্যা করেছেন। তা শুনে এন্টনি ঠিত থাকতে পারলেন না। খরব টি দেন মার্ডিয়ান। কিন্তু পুরো ঘটনা টি ছিল বানোয়াট। ক্লিওপেট্টা দেখতে চাইছিল মৃত্যর সংবাদ পেয়ে তিনি করেন। যাই হোক রাণী কে উদ্দেশ্য করে এন্টনি বলেন,আমি কেদেঁ কেদেঁ তোমার ক্ষমা প্রার্থনা করব। আর বেচেঁ থাকার অর্থ যন্ত্রণা; সমস্ত আলো নিভে গেছে সব শেষ হয়ে গেছে!রাণী, আমি তোমার কাছে আসছি,আমার জন্য অপেক্ষা করো। এন্টনি বন্ধু এরস কে ডেকে তাকে ছুড়িঁ চালানোর নির্দেশ দেন। এ অপমান সইতে পারেনি এরস। প্রভু এন্টনি কে মুখ ঘুরিয়ে দাড়াঁতে বলেন এরস। পরে নিজেই নিজের ছুড়িঁ দিয়ে নিজেকে শেষ করে দেয় এরস। এন্টনি তা দেখে বলেন,তুমি আমার চেয়েও মহান।রাণী এবং এরস,তোমরা দুজনে মহত্ব সৃষ্টি করেছো।
পরে এন্টনি নিজের তরবারি দিয়ে নিজেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পরেন। মারা যান এন্টনি। ততক্ষণে এন্টনির খোঁজে অনেকেই বেরিয়েছেন। কারণ,রাণী তাকে দেখতে চেয়েছিলেন। সৈন্যরা এসে এন্টনির রক্তাক্ত দেহ দেখতে পারেন। তিনি বলেন,তোমরা দেরি করে ফেলেছো। রাণীর সামনে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লিওপেট্টা কাঁদতে শুরু করেন তা দেখে। রাণী বলেন,ঠিক বলেছো তুমি,এন্টনি ছাড়া এন্টনি কে আর কেউ পরাজিত করতে পারবেনা।
এন্টনি বললেন, মিশরের রাণী,আমি মরতে চলেছি কিন্তু মৃত্য বলেছি কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা কর,আমি আমার ক্লিওপেট্টার ঠোটেঁ শেষ চুম্বন দিয়ে যাবো।রাণী তাকে বললেন,সিজার আমাকে ধ্বংস করেই সন্তুষ্ট হবে না। আরো বলেন,যাকে অবলম্বন করে তুমি বেচেঁছিলে তারই চুম্বনে তোমার মৃত্য হোক। যদি আমার ঠোঁটের ক্ষমতা থাকতো তাহলে আমি তোমার মৃত্য কে দূরে সরিয়ে দিতে পারতাম। এন্টনি জানায়,তুমি সিজারের কাছে আত্মসমর্পন করো।তাহলে নিরাপত্তা ও সম্মান দুটিই থাকবে। রাণী জানায়, এ দুটি জিনিস এক সাথে থাকতে পারে না। এন্টনির শেষ কথা,আমার মৃত্যর সময় আমার শেষের দিন গুলোর কথা ভেবে দুঃখ করো না বরং আমার আগেকার গৌরবের দিনগুলোর কথা মনে করো যেদিন আমিই ছিলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ট রাজা। রাণীকে ছেড়ে চিরতরে চলে যায় এন্টনি।


বন্ধু এন্টনির পরাজয়ের পর আলেকজান্দ্রিয়ায় বেশ খোশ মেজাজে আছেন সিজার। তিনু ডোলাবেলাকে বলেন, রাণী যেন তার কাছে বশ্যতা স্বীকার করেন। পরে শুনকে পারেন এন্টনি মারা গেছেন। প্রথমে সিজার বিশ্বাস করতে পারেনি। তিনি বললেন,এন্টনির মতো বড় মানুষের মৃত্য হলে পৃথিবীতে ভূমিকম্প উঠতো,তাতে ফাটল ধরতো, সবকিছু ওলটপালট হয়ে যেতো,সিংহরা ঘুরে বেড়াত রাস্তায় আর মানুষেরা ঘুরতো গুহায় গুহায়। এন্টনি নামের কারো মৃত্য হতে পারেনা,ওর নামের সাথে জড়িয়ে আছে অর্ধেক পৃথিবী।

ডারসেটাস বলেন,ভাড়াটে সৈন্যের হাতে নয়, বরং নিজের হাতেই মারা গেছেন তিনি। রক্তাক্ত তরবারি দেখার পর সিজার তা বিশ্বাস করেন।
পরে রাণীর সাথে দেখা করতে যায় সিজার। সিজার জানে রাণী ক্লিওপেট্টা অনেক সুন্দরী তাই তিনি মুখের দিকে না তাকিয়ে নিচে তাকিয়ে কথা বলেন। যাতে প্রেমে পরতে না হয়। সিজার আসার সাথেই রাণী তাকে স্বীকার করে নেয়। সিজার তাকে অভয় দেয়। তাকে রোমে নিয়ে যেতে চায় সিজার। সকল কথা শেষে সিজার ফিরে যায়। এদিকে ডোলাবেলার সাথে রাণীর গোপনে কথা হয়।সিজার চলে গেলে সিজারের সব প্লান তিনি রাণীকে জানান। রাণী তার সহচরী আইরাসকে জানায় কি ভাবছো? তিনি বলেন,মিশরীয় পুতুলের মতো তোমাকে আমাকে রোমের মানুষের সামনে প্রদর্শন করা হবে। নোংরা হাতে জনসাধারণের দেখার জন্য তারা উচুঁ বরে ধরবে। এটা কিছুতেই সইতে পারবে না ক্লিওপেট্টা। ক্লিওপেট্টা এক ধরনের বিষ পান করেন। ছোট এক টা সাপের কামড়। সে তা গ্রহণ করেন। চারমিয়ান ও আইরাস কে রাণীকে তাকে চুম্বন করতে বলেন। চুম্বনের পরেই আইরাস মারা যায়। রাণী বলেন,ঠোটঁ টাও আজ বিষধর সাপের মতো হয়ে গেছে। ক্লিওপেট্টার মৃত্য হয়। চারমিয়ান শোকে উদ্দেলিত হয়ে যায়। সিজার বললেন, এন্টনির কবরের পাশে ক্লিওপেট্টা কে শায়িত করা হবে। তারা শ্রেষ্ট প্রেমিক যুগল। তারপর শুরু হবে রোমে প্রত্যাবর্তনের পালা।

লিখেছেন- 

নাসিম আহমেদ,


শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। 





No comments

Powered by Blogger.