দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)


বিশ্বে যত জন সফল রাষ্ট্রনায়ক এসেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আব্রাহাম লিঙ্কন। শ্রেষ্ট রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে তার নাম সামনের দিকে। তিনি জন্মগ্রহণ করেন আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশে। বাবা ছিলেন ছুতোর মিস্ত্রী। বাবা টমাস লিঙ্কন অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতেন। কাঠের কাজ ও শিকার করে আয় করতেন তিনি। বাবার মতো আব্রাহামও পরিশ্রমী ও সাহসী হয়ে ওঠে। দীর্ঘ দেহ, উচ্চতায় ছয় ফুট চার ইঞ্চি। ছয় বছর বয়সে বিনা চিকিৎসায় তার মা মারা যান। 

টমাসের এক বন্ধু ছিল। সে মারা গেলে তার বউয়ের সাথে টমাসের বিয়ে হয়। সংসারের প্রয়োজনে তাকে আনতে বাধ্য হন টমাস। শৈশব কাটিয়ে কৈশোরে পা রাখেন আব্রাহাম। একদিন পণ্য নিয়ে নিউ অর্লিয়েন্সে তাকে যেতে হয়। ভালো লাভ করেন সেখানে। কিন্তু দেখতে পান, শিশু নারী পুরুষদের দাস হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি সঙ্গীকে বলেন, যদি কখনো সুযোগ পাই তাহলে আমি এই প্রথার বিপক্ষে কাজ করব। সেখানে এক গুদামে কাজ পান তিনি। পরে নির্বাচনেরর সময় অফিস দেখাশুনার দায়িত্ব পান। সেখান থেকেই রাজনীতির প্রতি তিনি আকৃষ্ট হতে শুরু করেন। 

মধুর বক্তৃতা, সুন্দর কথা, জ্ঞান, আচরণ দেখে সবার নজরে আসেন আব্রাহাম। পরে এক সরাইখারার মালিক জেমসের সাথে তার দেখা হয়। তিনি আব্রাহামকে রাজনীতি চালাতে উৎসাহিত করেন। তার এক মেয়ে ছিল নাম এ্যানি। প্রথম দেখাতেই আব্রাহাম তাকে পছন্দ করে ফেলে। কিন্তু পরে শুনতে পায় তার বাগদত্তা হয়েছে। এতে কষ্ট পায় আব্রাহাম। কিন্তু নিজেকে শক্ত করে নেন। 

ইলিনিয় প্রদেশ থেকে নির্বাচন করে হেরে যায় অভিজ্ঞতাহীন আব্রাহাম লিঙ্কন। ১৮৩৪ সালে নির্বাচন করে তিনি জয় লাভকরেন। অফিস টাইমে বসে থাকার চেয়ে বই পড়া শুরু করেন তিনি। তারই ফলশ্রুতিতে ১৮৩৬ সালে আইন পরীক্ষায় পাশ করে ওকালতি শুরু করেন। তিনি মিথ্যা মামলা নিতেন না। পরে পরে স্টিফেন ডগলাস তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। 

১৮৫৪ সালে নতুন রিপাবলিকান দল গঠনে ভূমিকা পালন করেন আব্রাহাম লিঙ্কন। এসময় দক্ষিণের প্রদেশ গুলো উত্তর থেকে বিচ্ছিনতার জন্য আন্দোলন করেন। ডগলাস ছিলেন তাদের পক্ষে। আব্রাহাম দেখলেন, বিভক্ত হলে দাস প্রথা থেকে যাবে এতে কোন সমাধান হবেনা। তাই তিনি এর প্রতিবাদ করলেন। পরবর্তি নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ডগলাম রিপাবলিকান প্রার্থী আব্রাহাম লিঙ্কনেরর কাছে হেরে যান। আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি। 

১৮৬১ সালের ফ্রেবুয়ারি মাসে ওয়াশিংটনে আসেন আব্রাহাম ও স্ত্রী মেরি। মার্চ মাসের ৪ তারিখে তিনি শপথ নেন। ঘোষণা করলেন বিচ্ছিনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ১৮৬৩ সালের ১লা জানুয়ারি তিনি দাস মুক্তির দলিলে সাক্ষর করেন। বললেন, কোন দিন যদি পৃথিবীর ইতিহাসে আমার নাম স্থান পায় তাহলে এই কাজের জন্যই স্থান পাবে।

স্ত্রীসহ থিয়েটারে যান প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্টকে একটা সংবাদ দেওয়ার কথা বলে প্রহরীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ভিতরে আসেন এক আততায়ী। ভিতরে ঠুকেই লিঙ্কনে গুলি চালায় আততায়ী। দীর্ঘ ৯ ঘন্টা মৃত্যর সাথে লড়াই করার পর সকাল সাত টায় তিনি মারা যান। মৃত্যর সময় তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। এই জীবনের মধ্যেই তিনি আমেরিকাকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। অখন্ডতা ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। জীবনকে উৎসর্গ করেছেন এক সার্বজনীন আদর্শের জন্য।

তথ্যসূত্র- মাইকেল এইচ হার্ট রচিত ১০০ জনের জীবনী।

লিখেছেন- 

নাসিম আহমেদ,

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। 

No comments

Powered by Blogger.