দ্যা ডেইলি এজুখেইশনে বিজ্ঞাপন দিতে কল করুন

+88 01521 20 70 54 (Call for Ad)

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর একটি ঘটনা


তিনদিন হলো হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মদিনাতে নেই । কেউ জানেনা রাসূল (সাঃ) কোথায় গেলেন । ওমর ফারুক (রাদীঃ) মুক্ত তরবারি হাতে ঘোষণা দিলেন, “যদি রাসূল (সাঃ)-র কিছু হয় তবে আমি ওমর বলছি মক্কার একটা মুনাফিকও আস্ত শরীরে থাকবে না।“ এদিকে আবু বকর (রাদীঃ) বললেন,
থামো ভাই চল বিশ্বনবী-র তালাস করি । দুই জনে মদিনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন । মরুভূমি পেরিয়ে পাহাড়ী এলাকায় আসলেন । একটু দূরে দেখলেন একজন রাখাল দাড়িয়ে আছে । আবু বকর (রাঃ) ও ওমর ফারুক (রাঃ) রাখালকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে দেখেছ ? ?
রাখাল উত্তরে বলল আমি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে চিনিনা এবং আপনাদেরকেও চিনিনা ।
তবে ঐ পাহাড়ের উপরে একজন লোক ইয়া উম্মাতি, ইয়া উম্মাতি বলে কাঁদছেন
আবু বকর (রাঃ) ও ওমর ফারুক (রাঃ) বুঝতে বাকি নেই, উনারা বুঝে নিলেন ঐ লোক আর কেউ না দয়াল নবীজি হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ।
রাখাল আবার বলল লোকটির সাথে সাথে আমার সব উঠ, ভেড়াগুলোও কাঁদতেছে আর খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে । আপনারা উনাকে নিয়ে যান তা নাহলে আমার সব উঠ, ভেড়াগুলো কাঁদতে কাঁদতে মরে যাবে ।
আবু বকর (রাঃ) ও ওমর ফারুক (রাঃ) পাহাড়ে গিয়ে দেখলেন দয়াল নবীজি সেজদা-রত অবস্থায় ইয়া উম্মাতি, ইয়া উম্মাতি বলে কাঁদছেন । নবীজির কষ্টে আবু বকর (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি আবু বকর ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে যত আমল করেছি সব আপনার উম্মাতকে দিয়ে দিলাম, আপনি দয়া করে মাথা উঠান ।
নবীজি মাথা উঠাননি । এবার ওমর ফারুক (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি ওমর যে আপনার মাথা নিতে গিয়ে নিজের মাথা দিয়ে দিয়েছি সে আপনার উম্মতের জন্য সব আমল দিয়ে দিলাম । নবীজি মাথা উঠাননি । আবু বকর (রাঃ) বললেন ওমর কাজ হবে না রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে একমাত্র ফাতিমা শান্ত করতে পারবে । তারা দুই জনে মদিনার দিকে ছুটছেন, পথে হযরত আলী (রাদীঃ) এর সাথে দেখা ।
আবু বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ) বললেন সামনে গিয়ে লাভ নেই, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে শান্ত করতে ফাতেমাকে লাগবে ।
এবার তিন জনে ফাতিমার বাড়ির সামনে আসলেন আলী (রাদীঃ) ফাতেমা (রাঃআনহা)-কে ডাক দিলেন, ফাতেমা বাইরে আসেন স্বামীর চেহারা দেখে বললেন, আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন, তবে কি মক্কার মুনাফিকরা আমার আব্বাজানকে মেরে ফেলছে ? আলী (রাদীঃ) বললেন তুমি তাড়াতাড়ি চলো নবীজি ইয়া উম্মাতি, ইয়া উম্মাতি বলে কাঁদছেন, মাথা উঠাচ্ছেন না ।
ফাতেমা দৌড়ে গেলেন । রাসূল (সাঃ)-র কাছে গিয়ে বলছেন আব্বাজান আপনি সফরে যাবার আগে এবং সফর থেকে ফিরে প্রথমে আমাকে দেখতেন, আমার সাথে কথা বলতেন । কিন্তু আজ তিন দিন হল আপনার কোন খোঁজ নেই, আপনি কি আমাকে ভুলে গেছেন ? নবীজি তাও মাথা উঠাননি ।
ফাতেমা (রাঃ) বললেন আব্বাজান আমি আপনার ফাতেমার সকল নেকী আপনার উম্মাতকে দিয়ে দিলাম । নবীজি মাথা উঠাননি । রাসূল (সাঃ) এর দুই পাশে হাসান, হুছাইন দাড়িয়ে বলতেছেন নানাজান উঠেন, নানাজান উঠেন । রাসূল (সাঃ) মাথা উঠাননি ।
হঠাৎ ফাতেমা (রাঃ আনহা) বলে উঠলেন
“আব্বাজান আপনি উঠেন আমি আপনার উম্মতের জন্য আমার হাসান, হুছাইনকে কুরবানী করে দিলাম ।“
"আল্লাহ্ আকবার" "আল্লাহ্ আকবার"
"আল্লাহ্ আকবার" ।
এবার হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মাথা উঠালেন আর বললেন ফাতেমা তুমি যে দোয়া করেছ আমার আল্লাহ্ রাব্বুল আল-আমিন তোমার দোয়া কবুল করেছেন ।
মহানবী-রাসূল (সাঃ), সাহাবিদের রক্ত ঝরানোর কারনেই সেই দ্বীন আজ আপনার আমার কাছে আসতে পেরেছে ।
আসুন আল্লাহ্ তায়ালারা হুকুমগুলো রাসূল (সাঃ)-র তরীকায় পালন করার চেষ্টা করি । আমিন

No comments

Powered by Blogger.